লাগামহীন আদা, জিরা
প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
আমদানি নির্ভর মশলা জাতীয়পণ্যের মধ্যে আদা ও জিরার গুরুত্বও কম নয়। এ দুটি পণ্য রাধুঁনীর রান্নায় অথবা রেসিপিতে স্বাদ কিংবা সুগন্ধ এনে দেয়। কোনো মাংস, মাছ কিংবা অন্য কোনো তরকারিতে এ পণ্য দুটি নিত্যদিনের সঙ্গী। বর্তমানে আদা ও জিরার দাম লাগামহীন হয়ে পড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বেড়ে ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। জিরার দামও কেজিতে ১৩০ টাকা বেড়েছে। এখনো চিনি নির্ধারিত দামে অর্থাৎ ১০৭ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু সবজির বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, ডলারের সংকটে চায়না থেকে আদা আসা বন্ধ হয়ে গেছে। এজন্য লাগামহীন হয়ে পড়েছে আদার দাম। শ্যামবাজারেই সহজে আদা পাওয়া যায় না। পিকনিকসহ বিভিন্ন উৎসব চমে উঠলেও আগের সপ্তাহের মতো মুরগি, গরু ও খাসির মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। জননী ব্রয়লার হাউজ, মায়ের দোয়াসহ অন্য মুরগি ব্যবসায়ীরা বলেন, আগের সপ্তাহের মতো ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। পাকিস্তানি ও লেয়ার মুরগিও ২৪০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। আগের সপ্তাহের মতোই ১১৫ থেকে ১২০ টাকা ডজন ডিম বিক্রি করা হচ্ছে।
এদিকে মাংসের মতোই রুই, কাতলা, ইলিশসহ প্রায় মাছ বিক্রি করা হচ্ছে আগের সপ্তাহের দামেই। বিক্রেতারা জানান রুই ও কাতলার কেজি ২২০-৪৫০ টাকা, চিংড়ি ৫০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি, টেংরা, বোয়াল, আইড়ের দাম কমে ৫০০-৮০০ টাকা, কাচকি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০, কাজলি, বাতাসি ৬০০ টাকা, পাঙ্গাস, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
ইলিশের দামও কমতির দিকে। এক কেজিরটা ১০০০ টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, এর বেশি বড় হলে ১ হাজার ২০০ টাকা ও দেড় কেজির উপরে হলে ১৫০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে ছোটগুলোর দাম একটু কম। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশেই বেশি মাছের উৎপাদন। ১৫ দিন আগে দেশি আদা ১০০ ও চায়না আদা ১২০-১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হলেও গত সপ্তাহ থেকে বেড়েই যাচ্ছে আদার দাম। তা লাগামহীন হয়ে পড়েছে। ২২০ থেকে ২৪০ টাকার চায়না আদার কেজি ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। তবে দেশি আদার দাম আগের মতোই ১২০-১৩০ টাকা কেজি।
আদার দাম বাড়লেও আগের মতোই দেশি রসুনের কেজি ১০০ টাকা, চায়না রসুন ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। আর নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসায় এর দামও কমে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে জিরার দামও লাগামহীন পড়েছে, তা ৫৫০ থেকে ৬৮০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে ব্যবসয়ীরা জানান।
তবে আগের চেয়ে প্যাকেট আটার দাম কমে ২ কেজি ১৩০ টাকা ও খোলা আটার কেজি ৬০ বিক্রি করা হচ্ছে। আল্লাহর দানের মামুন ও আলী স্টোরের আলী হোসেন বলেন, ১ লিটার সয়াবিন তেল ১৮৫ টাকা, ২ লিটার ৩৭০ ও ৫ লিটার ৮৮০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। আগের মতো মসুর ডাল ৯৫-১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। আগের সপ্তাহের মতোই টমেটোর কেজি ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, মরিচ ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বেগুণ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২০ থেকে ৪০ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকা, শিমের কেজি ২৫ থেকে ৫০ টাকা, পটল ৪০ টাকা। তবে করলা ও ঢেঁড়সের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা হয়ে গেছে। মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৩০ টাকা, মূলা ও পেঁপের কেজি ২০ থেকে ৩০ টাকা। শসা ও গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা।
আগের দামেই চাল বিক্রি করা হচ্ছে বলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের কুমিল্লা রাইস এজেন্সির আবুল হাসেমসহ অন্য চাল ব্যবসায়ীরা জানান, মোটা চালের দাম কমেনি। মোটা স্বর্ণা চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। তবে ২৮ চালের দাম কিছুটা কমে বর্তমানে তা ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে রশিদসহ অন্যরা ৭০ থেকে ৭২ টাকা কেজি বিক্রি করলেও তীর ও প্রাণ মিনিকেট ৭৪ থেকে ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি করছে। ১০ কেজির তীর মিনিকেট ৭৮০ টাকা ও ৫ কেজির প্রাণ মিনিকেট ৪২৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান সালমান ট্রেডার্সের মো. ফেরদৌস। এছাড়া বাসমতি ৮৮, নাজিরশাইল ৮২ থেকে ৯০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। পোলাও চালের দামও কমেনি। খোলা চালের কেজি আগে ১২৫ টাকা বিক্রি করা হলেও তা ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। আর কোম্পানির প্যাকেট পোলাও চাল ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।