রিজার্ভ নেমেছে ৩২.৪৭ বিলিয়ন ডলারে

৮৫০ কোটি ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চায়ন (রিজার্ভ) এখন ৩২ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার। রাষ্ট্রায়ত্ব বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ৫ কোটি ডলার বিক্রির পর রিজার্ভের এই পরিমাণ আরও কমেছে। এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল। কিন্তু এরপর থেকে আমদানি ব্যয় মেটাতে রিজার্ভ থেকে বিক্রি করা হয়, অন্যদিকে রিজোর্ভের নিয়ামক প্রবাসী আয়, রপ্তানি আয় এবং বৈদেশিক ঋত ও অনুদান একই হারে বাড়েনি। এতে টান পড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ২০২২ সাল থেকে রিজার্ভ কমতে কমতে এ পর্যায়ে নেমেছে। এর আগে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে বেড়েছিল। ১০ বছর আগে ২০১৩ সালের জুন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। ২০১৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলারে। সেখান থেকে আরও বেড়ে ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর ৪০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে তা বেড়ে প্রথম বারের মতো ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। রিজার্ভের এ অঙ্ক ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ। এরপর আর রিজার্ভের সেই ধারাভ ধরে রাখা যায়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলছেন, বৈদেশিক বাণিজ্যের ঘাটতির কারণে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে হয়েছে। বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট পাঁচ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৭৯ কোটি ডলার। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ ১ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি। একই সময়ে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ঘাটতিও ৬ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে তিনগুণ বেশি। ঘাটতি মেটাতে ডলার বিক্রি করায় টান পড়তে থাকে রিজার্ভে।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮৫০ কোটি ডলার বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মূলত সরকারের আমদানির দায় মেটাতে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে এ রিজার্ভ বিক্রি করা হয়। আর গত সোমবারই বিক্রি করে ৫ কোটি ডলার। ফলে রিজার্ভের পরিমাণ নামে ৩২ বিলিয়ন ডলারেরও নিচে।

অবশ্য ব্যবহার যোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ আরও ৮ বিলিয়ন ডলার কম। এই অর্থ দিয়ে বিভিন্ন রকম তহবিল গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলেছে, সর্বোচ্চ তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো রিজার্ভ থাকলেই তা যথেষ্ট বলে বিবেচিত হয়। বর্তমান রিজার্ভ কিছুটা ঝুঁকির বার্তা দিলেও এখনো বিপৎসীমার নিচে নামেনি। আগামীতে রেমিট্যান্স, প্রবাসী আয় বা বৈদেশিক ঋণের মাধ্যমে আসা ডলার যোগ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এর ফলে রিজার্ভ কমলেও বিপৎসীমা অতিক্রম হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।