দেশি ও বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি আবশ্যক : ডিসিসিআই সভাপতি

প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশে স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করা প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) নবনির্বাচিত সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার। ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজুলর রহমানের সঙ্গে ডিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদের সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ মত প্রকাশ করেন। এ সময় ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এসএম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান), সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলীসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষাৎকালে ব্যারিস্টার সাত্তার সালিস আইন ২০০১, দেউলিয়াবিষয়ক আইন ১৯৯৭ এবং কোম্পানি আইন ১৯৯৪ এর উল্লেখযোগ্য সংস্কারের পরামর্শ দেন। তিনি আরো বলেন, ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখে সংশোধনী আনতে হবে, যাতে করে ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে সহজে বাণিজ্যিক চুক্তি কার্যকর করতে পারে এবং যে কোনো বাণিজ্যিক বিরোধ দ্রুত সমাধান করতে পারে। ব্যারিস্টার সাত্তার একটি পৃথক ‘কমার্শিয়াল কোর্ট’ স্থাপনের জন্যও তাগিদ দেন, যা চুক্তি প্রবলের প্রক্রিয়াকে সহজ করতে পারে এবং দ্রুত বিরোধ নিষ্পত্তির পাশাপাশি বিচারাধীন বাণিজ্যিক বিরোধের জট কমাতে পারে। দেউলিয়া আইন কোম্পানির জন্য প্রযোজ্য এবং ব্যবসাবান্ধব করার জন্য সংস্কার প্রয়োজন যাতে করে দুর্বল কোম্পানিগুলো বন্ধ না হয়ে যায় এবং এসব কোম্পানিগুলোকে কার্যকর পদ্ধতিতে পুনর্গঠন করা যায়। এর ফলে, এটি বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে। উল্লেখ্য আইনগুলো সংস্কারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্যান্য উন্নত দেশ থেকে আন্তর্জাতিক মান গ্রহণ করতে পারে। বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে অতিদ্রুত একটি সমন্বিত ও কার্যকর ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস)’ কার্যক্রম চালুরও দাবী করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি। ওএসএসের সাথে সংযুক্ত সব প্রতিষ্ঠানকে এমনভাবে কাজ করতে হবে, যাতে বিডা’র ওএসএস-এ আবেদন করার পর বিনিয়োগকারীদের আলাদাভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যেতে না হয়। এটি নিঃসন্দেহে বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করবে। ডিসিসিআই সভাপতি আরো গুরুত্বারোপ করে বলেন, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য আমাদের অবশ্যই ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এই পরিবর্তনশীল অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং একটি সুদৃঢ় বেসরকারি খাত তৈরির উপরও মনোনিবেশ করা প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, এমপি বলেন, করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশি^ক অর্থনীতি একটি সংকটকালীন সময় অতিক্রম করছে। এই পরিস্থিতিতে, বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রবাহ বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তিনি স্থানীয় ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পের সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর জোরারোপ করেন। বিডা’র ওএসএস সেবার বিষয়ে তিনি বলেন, বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে সহায়তার লক্ষ্যে স্থানীয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সমন্বিত এবং কার্যকর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ওএসএসকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিডা’র প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। একই সাথে, জিডিপিতে রাজস্বের অবদান বাড়াতে তিনি রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে করজাল সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।