মশলার বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমদানি শুল্ক শিথিলের দাবি

প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

বর্তমানে দেশের মশলার বাজার অস্থিতিশীল। বিশেষ করে আদা ও রসুনের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আসন্ন রমজানে মশলার বাজার স্থিতিশীল রাখতে নির্বিঘ্নে এলসি খোলা, আমদানি শুল্ক শিথিল ও বাজরে তদারকি অভিযান বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছে মসলা ব্যবসায়ীরা। গতকাল সোমবার গরম মশলার মূল্য ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তারা এসব দাবি জানায়। অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান।

এসময় ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে সফিউজ্জামান বলেন, এলসির বিষয়টি বর্তমানে স্বাভাবিক হচ্ছে। তাছাড়াও মশলার আমদানির বিষয়ে এলসি খোলা নিয়ে আমি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবো। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। এ সমস্যা যেন দ্রুত সমাধান হয় সেই বিষয়ে আমরা বন্দর ও অন্যান্যদের সঙ্গে কাজ করবো। রমজানের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের শুল্ক কাঠামোর বিষয়ে এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা চলছে। মশলার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। তবে বাজার অভিযান স্থিতিশীলের বিষয়ে তিনি বলেন, অভিযান শিথিল করতে হলে ব্যবসায়ীদের সে দায়িত্ব নিতে হবে। কিন্তু অসাধু পথে দাম বাড়ানো, অনিরাপদ সামগ্রী, মসলায় রং ব্যবহার করা, সেটা হবে না। আমরা অভিযানের সময় দেখি ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে দেয়। দোকান বন্ধ করে চলে যাওয়া মানেই এখানে কোনো একটা সমস্যা রয়েছে। তাহলে আমরা শুধু অভিযান বা কঠোর আইনি পদক্ষেপই গ্রহণ করবো না, বাজার কমিটির বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, গরম মশলার বাজার বেশ কিছুদিন ধরে অস্থির দেখা যাচ্ছে। বর্তমান বাজার ও আসন্ন রমজান মাস কেন্দ্র করে গরম মশলার বাজার যেন অস্থির না হয় সে লক্ষ্যে আজ আমাদের এ সভা। আমরা বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী বিভিন্নভাবে দেখেছি এরই মধ্যে জিরার দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সামনে আসন্ন রমজান মাস কেন্দ্র করে মশলার বাজার স্থিতিশীল রাখতে হবে। তিনি বলেন, আমরা দেখি খাবারে প্রচুর পরিমাণে রঙের ব্যবহার করা হয়। যা মানুষের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। রমজান মাসে এর পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। রমজান কেন্দ্র করে গরম মশলার দাম কেউ যদি অন্যায়ভাবে বৃদ্ধি করেন তাহলে অভিযানের পাশাপাশি কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ফুডগ্রেড রঙের পরিবর্তে যদি খাবারে অন্য রং মেশানো হয় তাহলেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজারে পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে মূল্য তালিকা থাকতে হবে। এছাড়া অবশ্যই ক্যাশ মেমো ব্যবহার করতে হবে বলেও তিনি জানান। এসময় সভায় মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজমল হোসেন বাবু বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে ব্যাংক মশলার জন্য আমাদের এলসি দিচ্ছে না। আর মশলার বাজার হচ্ছে আমদানি নির্ভর। শুধু বাংলাদেশ নয়, নানা কারণে সারা বিশ্বেই এ সমস্যা চলছে। জিরাসহ অধিকাংশ মসলা আমাদের দেশে আসে আফগানিস্তান, তুরস্ক ও ভারত থেকে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আফগানিস্তান ও তুরস্ক কিন্তু কোনো এলসি দিচ্ছে না। আমরা এখন শুধু ভারত থেকে জিরা আমদানি করেছি। কিন্তু এখন ভারতেও জিরার দাম বেড়েছে। এছাড়া ভারতও কখন বন্ধ করে দেয় কি না তাও বলা যাচ্ছে না। এছাড়া ডলারের দামও গত বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছি। তার পরও আমরা চেষ্টা করছি এ সমস্যা থেকে বের হয়ে আসার জন্য। তবে আশাকরি রমজানে আমরা মশলার বাজার স্থিতিশীল রাখতে পারবো।