বাংলাদেশ ব্যাংকের আট সেবা মিলবে বিডার ওয়ান স্টপে

প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে উন্নত বিনিয়োগ সেবার বিকল্প নেই। তাই বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ করতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এক দরজায় সেবা বা ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার (ওএসএসসি) চালু করেছে। প্রতিনিয়ত এ কেন্দ্রের সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে সংস্থাটি। এরই অংশ হিসেবে নতুন করে বিডার ওয়ান স্টপে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আট সেবা। শুধু তাই নয় এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছে আরও চারটি বাণিজ্যিক ব্যাংক। গত ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকে এ সংক্রান্ত একটি যৌথচুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোরশেদুল কবির, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এবং কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের কান্ট্রি ডিরেক্টর। চুক্তি অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে আটটি সেবা বিডার ওয়েবসাটি পাওয়া যবে তার মধ্যে রয়েছে অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় মেয়াদি ঋণ গ্রহণের অনুমতি, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার দেশ থেকে বিদেশ, বিদেশ থেকে দেশে এবং বিদেশ থেকে বিদেশে হস্তান্তরের অনুমোদন, বিদেশ থেকে কোনো কোম্পানির লভ্যাংশ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা। পরামর্শক ফি বিদেশে পাঠানোর অনুমতি। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয়, এমন কোম্পানির বিদেশি মালিকের শেয়ার দেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে অর্থ বিদেশে নেয়ার অনুমোদন, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানের অর্থ পুনরায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে পরিশোধের সুযোগ, বাংলাদেশে বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে অবশিষ্ট অর্থ বিদেশে পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়া এই সেবার অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া ঘরে বসেই অগ্রণী ও মিচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে বিডার অনলাইন সেবার মাধ্যমে। কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা স্বল্প সময়ের জন্য অনলাইন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে একই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘আগামী ৪ বছরের মধ্যে পুরোপুরি না হলেও ৭৫ শতাংশ লেনদেন অনলাইনভিত্তিক (ক্যাশলেস) করার চেষ্টা করছি। মানুষ নগদ টাকার ব্যবহার যত কম করবে; তার ফলে অর্থনৈতিক কার্যক্রম তত বাড়বে।’

গভর্নর বলেন, ‘অনলাইনে আমাদের বিনিয়োগ যত বাড়বে তার ফলে আমাদের কর্মসংস্থান তত বৃদ্ধি পাবে। প্রতি বছর বাংলাদেশের কর্মবাজারে ২০ লাখ মানুষ নতুন করে প্রবেশ করে। এরমধ্যে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ হাজার সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়ার সুযোগ পায়। ৪ থেকে ৫ লাখ লোক বিদেশে যায়। বাকিদের কর্মসংস্থান দেশের মাটিতেই করতে হবে। তাই বিনিয়োগের কোনো বিকল্প নেই।’ তিনি আরও বলেন ‘আমাদের দেশে ব্যাপক পরিমাণে মধ্য আয়ের লোকবল তৈরি হয়েছে। অর্থনৈতিক কার্যক্রম যত বৃদ্ধি পাবে দেশের উন্নয়ন তত টেকসই হবে। আমাদের দেশে প্রায় ২ কোটির বেশি লোক আছে যাদের প্রতি বছরের ইনকাম ১২ হাজার ডলারের বেশি। আমাদের দেশের অর্থনীতির বড় অংশ অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে আসে। তাই স্থানীয় বাজারে বিনিয়োগের বড় ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে। ‘বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক সেবা অটোমেশনের আওতায় আনা হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া প্রি-ফাইন্যান্স ও রি-ফাইন্যান্সের (পুনঃঅর্থায়ন স্কিম) ঋণ বিতরণ হচ্ছে আরটিজিএসের মাধ্যমে।’ এছাড়া আমাদের প্রধান ব্যবসাগুলো অনেক আগে থেকেই অনলাইনের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে বলে মন্তব করেন গভর্নর। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আরও বলেন, ‘আমরা বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিস পোর্টালের মাধ্যমে আটটি সেবা দেয়ার জন্য এরই মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। যত দ্রুত সম্ভব আগামী এক মাসের মধ্যে সার্ভিসগুলোর মাধ্যমে সেবাগুলো বাস্তবে রূপ দেয়ার চেষ্টা করব। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগের কোনো বিকল্প নেই। এজন্য বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতো বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিডার প্রতি আহ্বান জানান গভর্নর।