ঢাকা ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আর্জেন্টিনার অন-অ্যারাইভাল ভিসা সময়ের ব্যাপার : বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্য বাড়াতে বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মধ্যে চুক্তি
আর্জেন্টিনার অন-অ্যারাইভাল ভিসা সময়ের ব্যাপার : বাণিজ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশিদের জন্য আর্জেন্টিনার অন-অ্যারাইভাল ভিসা সময়ের ব্যপার। একসময় এটি শুরু হয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মধ্যে মেমোর‍্যানডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং আর্জেন্টিনার পক্ষে ঢাকায় সফররত দেশটির ফরেন অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড মিনিস্টার সানতিয়াগো ক্যাফিয়েরো এমওইউ স্বাক্ষর করেন। অনেক দেশই আর্জেন্টিনায় অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পায়, বাংলাদেশও পাবে কি না, জানতে চাইলে টিপু মুনশী বলেন, ‘আর্জেন্টিনার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হলো। এখানে অ্যাম্বাসি খোলা হয়েছে। তারা তো ঘোষণা করেছে সরকারিভাবে যারা যাবে তাদের ভিসা লাগবে না। তবে অন-অ্যারাইভাল ভিসা সময়ের ব্যাপার। যেমন ২৮ ফেব্রুয়ারি আমরা চুক্তি স্বাক্ষর করলাম’। ‘তাদের দেশের ব্যবসায়ীরা আসছে, আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা যাচ্ছে। সময়ের ব্যবধানে সেটিও হয়ে যাবে। আর্জেন্টিনা আমাদের মনের মধ্যে আছে, সেটি তারা জানে। সারা পৃথিবীতে আর্জেন্টিনার পরে বাংলাদেশ হচ্ছে আর্জেন্টিনা ফুটবল টিমের সাপোর্টার। সেই সম্পর্ক আমাদের আছে। আশা করি একসময় অন-অ্যারাইভাল ভিসা শুরু হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘তাদের সাথে বাণিজ্যিক চুক্তির মধ্যমে বিভিন্ন আইটেম আসবে। তার মধ্যে রয়েছে সয়াবিন তেল, চিনি, সানফ্লাওয়ার অয়েল, গমসহ অনেকগুলো আইটেম। আমাদের দেশ থেকে একটা বড় সুযোগ রয়েছে। তাদের ওখানে ২৭ কোটি মানুষ। সেক্ষেত্রে রেডিমেড গার্মেন্টসটা এক্সপ্লোর করতে পারি। এটি এক্সপ্লোর করলে সঙ্গে অন্য কিছু আইটেম এক্সপ্লোর করতে পারলে ব্যবসাটা বাড়বে।’

আর্জেন্টিনার ফরেন অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড মিনিস্টার বলেন, ফুলবল একটি চ্যানেল যার মাধ্যমে দুই দেশের মানুষকে একত্রিত করেছে। অথচ দুই দেশ ভৌগলিকভাবে অনেক দূরে। ফুটবল মাঠে দলের খেলায় আমাদের দু-দেশের মানুষই অনেক বেশি উৎফুল্ল হয়। আমরা দুই দেশের সুসম্পর্কে বিশ্বাসী।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। এ অর্জন বিশ্বে বাংলাদেশের পজিটিভ ইমেজ বিল্ডিং এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টির পাশাপাশি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে। যার ফলে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের বিদ্যমান বাণিজ্য সুবিধা সংকুচিত হবে। এতে জানানো হয়, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের এ সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংরক্ষণ, সম্প্রসারণ, বিভিন্ন দেশে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা নিশ্চিত করা এবং বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এরই মধ্যেই বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশ ও ট্রেড ব্লকের সঙ্গে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে বাণিজ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সম্ভাবনাময় দক্ষিণ আমেরিকান দেশগুলো সফর করেছেন। এ অঞ্চলের বাণিজ্য জোট মার্কোসুরের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের লক্ষ্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে খাদ্যনিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। আর্জেন্টিনা বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার এবং বিশ্বের প্রধান খাদ্য উৎপাদকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। আর্জেন্টিনা বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য একটি বাণিজ্য সম্ভাবনাময় এলাকা। পণ্য ছাড়াও সেবা ও বিনিয়োগ খাতেও আর্জেন্টিনার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আর্জেন্টিনার সঙ্গে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার বন্ধন আরো জোরদার এবং বাণিজ্য সম্পর্ক গভীর করার উদ্দেশ্যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদারকরণে এবং উভয় দেশের জনগণের কল্যাণে তাদের নিজ নিজ অর্থনীতির অগ্রগতি সাধনে পারস্পরিক স্বার্থ সমুন্নত করার লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্বাক্ষরের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে উভয় দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ অন্যান্য দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য বিনিময়ের উন্নয়ন ও বর্ধিত করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত