চিনি আমদানিতে ৫ শতাংশ শুল্ক কমানো হলেও খুচরায় এর প্রভাব কোনোভাবেই পড়েনি। আড়তদারদের দাবি, কম মূল্যের চিনি আসেনি। খুচরা বিক্রেতারা এ পণ্য বিক্রি করছেন পুরোনো দামেই। গত শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচা ও মিরপুরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। বাজারগুলোয় সাদা খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১১৫ টাকা। দোকান ভেদে দাম নেয়া হচ্ছে আরো ৫ টাকা বেশি। প্যাকেট চিনিও বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। দেশি চিনি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। আজব ব্যাপার হলো, সব দোকানে দেশি চিনি মিলছে না। সেগুনবাগিচার সিটি কর্পোরেশন বাজারসহ আশপাশের দোকান ও ফার্মগেটেও একই কাণ্ড। মিরপুরে খালেকের মুদি দোকানে খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। আহসানও একই মূল্যে প্যাকেট চিনি বিক্রি করছেন। শুল্ক কমানো হয়েছে, বাজারে দাম কমার কথা। কিন্তু কেন আগের দামেই চিনি বিক্রি করছেন, জানতে চাইলে এ দোকানিরা বলেন, যেখানে কমেছে সেখানে থেকেই নেন। আমরা আগের দামে চিনি কিনেছি; বিক্রিও আগের দামে করছি। এ সময় কোন দোকান থেকে পূর্বমূল্যে চিনি কিনেছেন জানতে চাইলে তারা পাইকারি মূল্যে চিনি কেনার রশিদ দেখান। এতে দেখা যায়, ৫০ কেজি চিনির বস্তা দাম লেখা আছে ৫ হাজার ৪৭০ টাকা। সে হিসেবে প্রতি কেজি চিনির দাম ১০৯ টাকা ৪০ পয়সা। কেজি প্রতি চিনির দাম কম হলেও ১০ টাকা করে বেশি কেন রাখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশি পরিমাণে কিনলে ১১৫ টাকায় বিক্রি করতে পারব।
মিরপুর-১০ নম্বরের পাইকারি বিক্রেতা দুলাল এজেন্সির মালিক হাজী আইয়ুব আলী দুলাল জানান, এখনো কম দামে তারা চিনি পাননি। যে কারণে পূর্বমূল্যে চিনি বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি এ প্রতিবেদক চাইলে ৫ হাজার ৪৬০ টাকায় এক বস্তা চিনি দিতে পারবেন বলেও জানান। কম দামের চিনি পাননি, তাহলে বস্তায় ১০ টাকা কমাতে চাইছেন কেন জানতে চাইলে দুলাল বলেন, ডলারের দাম ওঠা-নামা করায় দাম কমেছে। শুল্ক কমানোয় দাম কমে কি না, প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, কম দামের চিনির এখনও পাইনি। মৌলভীবাজার চিনির আড়তে চিত্র ভিন্ন। সেখানে খুচরা পর্যায়ে চিনি ১১০ থেকে দোকান ভেদে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাংবাদিক এসেছে জানতে পারলে দোকানিরা ১১০ টাকায় চিনি বিক্রি করা হচ্ছে বলে দাবি করেন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জানতে চাইলে চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি আবুল হাসেম বলেন, শুল্ক কমানো চিনির বাজারে এখনও পৌঁছেনি। কম দামের চিনি বাজারে এলে দামও কমবে। যদিও মিলাররা কেজিতে ২ টাকা কমিয়েছেন। আগে প্রতি কেজি খোলা চিনি দিতেন ১০৯ টাকায়, এখন বিক্রি করছে ১০৭ টাকায়। এজন্য আশপাশের খুচরা পর্যায়ে চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। মিলারারা যেভাবে চিনির দাম কমাবে খুচরা পর্যায়ে কিছুটা কমবে। এর বেশি কমানো সম্ভব না।
মিরপুর, সেগুনবাগিচা বা ফার্মগেট এলাকায় ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় চিনি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, শুল্ক উঠে যাওয়ার পর কম দামের চিনি বাজারে আসতে আরো সময় লাগবে বলে জানিয়ে সিটি গ্রুপের বিপণন বিভাগের ম্যানেজার বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, শুল্ক কমানোর পর বাজারে কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমবে। তবে সেটা দেরি আছে। কম দামের চিনি এখনও পৌঁছেনি। চলতি মাসের ১০ তারিখে পোর্টে আসবে।