৮ মাসে রিজার্ভ কমল প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার
প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের শুরু থেকেই ধারাবাহিকভাবে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। গত অর্থবছরের জুনে রিজার্ভ ছিল ৪১ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে গ্রস রিজার্ভ ৩১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমেছে। অর্থাৎ আট মাসে রিজার্ভ কমেছে ১০ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এদিকে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষ্যে আমদানির যে চাপ ছিল তা কমেছে। এছাড়া ঈদ উপলক্ষ্যে বেশি করে রেমিট্যান্স আসা শুরু করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এরইমধ্যে ডলার মার্কেট স্থিতিশীল করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তাই এখন থেকে রিজার্ভ বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪১ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সেটি কমে দাঁড়ায় ৩৯ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলারে। এর পর প্রতি মাসেই রিজার্ভ কমেছে। আগস্টে ছিল ৩৯ দশমিক শূন্য ৬, সেপ্টেম্বরে ৩৬ দশমিক ৪৭, অক্টোবরে ৩৫ দশমিক ৮০, নভেম্বরে ৩৩ দশমিক ৭৮, ডিসেম্বরে ৩৩ দশমিক ৭৪, জানুয়ারিতে ৩২ দশমিক ২২ এবং সম্প্রতি রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। অর্থাৎ গত আট মাসে রিজার্ভ কমেছে ১০ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। এদিকে আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী নিট রিজার্ভ নেমেছে ২২ বিলিয়নে।
এছাড়া ডলার সংকট কাটাতে এরইমধ্যে আমদানি কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার। এরপরেও চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) দেশের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারে। আমদানির চেয়ে রপ্তানি কম হওয়ায় বড় এই বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে ৫ দশমিক শূন্য ৮ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এদিকে আমদানি দায় পরিশোধ করতে বিভিন্ন ব্যাংকের ধারাবাহিকভাবে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন পর্যন্ত রিজার্ভ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। রিজার্ভের পতন ঠেকাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) তহবিল থেকে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন পেয়েছে বাংলাদেশ। এরইমধ্যে এই ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ডলার ছাড় হয়েছে। এরপরেও রিজার্ভের নিম্নমুখি প্রবণতা বজায় রয়েছে।
দেশের ইতিহাসে ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করেছিল। এরপর ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে এর প্রভাব পড়ে দেশের রিজার্ভে। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলসহ বিভিন্ন তহবিলে দেয়া ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বাদ দিয়ে রিজার্ভের হিসাব করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এতে সম্মত হয়েছে। সে হিসাবে এখন ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ২২ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার।