মুরগি-ডিমের অস্বাভাবিক দাম বাড়ালে সরকার বসে থাকবে না

প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে পোলট্রি শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের দাম বেড়েছে। এর প্রভাবে দাম বেড়েছে মুরগি ও ডিমের। তবে অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়ালে সরকার নীরব বসে থাকবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে (আইসিসিবি) ১২তম আন্তর্জাতিক পোলট্রি শো-২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, আমরা ২০১৫ সালে দানাদার খাদ্য নিশ্চিত করেছি। মানুষের খাদ্যের আর সমস্যা নেই। এখন আমরা কাজ করছি নিরাপদ ও পুষ্টিমান-সমৃদ্ধ খাদ্য নিশ্চিত করতে। এজন্য ডিম ও মাংসের উৎপাদন বাড়াতে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কোথাও কোন সমস্যা হলে সমাধানের দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে। কোনো অজুহাতে অস্বাভাবিক বা অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়ানো যাবে না। বলেন, পুষ্টিমান-সমৃদ্ধ খাদ্যের অভাবে মেধার বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে। আমরা এখনো ভাতজাতীয় খাদ্যে অভ্যস্ত। আগামীতে যাতে মেধাবী জাতি হিসেবে বিকশিত করতে প্রোটিন ও আমিষ নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে। ভাতের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আমিষ বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেয়া হয়েছে। পোলট্রি খাতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিদেশি বিনিয়োগে সব ধরনের সুবিধা দেয়া হচ্ছে।

ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার (ওয়াপসা-বিবি) সভাপতি মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এমদাদুল হক তালুকদার, বিএলআরই’র মহাপরিচালক এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, এসোসিয়েশনের মহাসচিব মাহবুব হাসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব ড. নাহিদ রশীদ বলেন, কোভিডের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পুরো বিশ্বকে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। দাম বেড়েছে সব ধরনের পণ্যের। বাংলাদেশও সে অবস্থা থেকে বাদ যায়নি। আঘাত পোলট্রি শিল্পেও লেগেছে। এ আঘাত ঠিক সেই সময়ে লেগেছে, যখন পোলট্রি শিল্প ট্রানজিশন পিরিয়ড অতিক্রম করছে।

তিনি বলেন, পোলট্রি শিল্পের বিকাশ হচ্ছে, দেশের প্রধান শিল্প তৈরি পোশাকের পরই দ্বিতীয় বৃহৎ শিল্পের আকার ধারণ করছে। এ অবস্থা মোকাবিলা করে পোলট্রি শিল্পকে টেকসই ও নিরাপদ শিল্পে পরিণত করতে হবে, যার ধারাবাহিকতায় দেশের চাহিদা পূরণ করে ২০২৫ সাল নাগাদ পোলট্রি পণ্য রপ্তানি করা হবে। তিনি উৎপাদন বাড়াতে ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানের সভাপতি ও ওয়ার্ল্ড পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কামাল আহমেদ বলেন, নিরাপদ মুরগি ও ডিম উৎপাদন করতে চাই। পোলট্রি বোর্ড গঠন করুন। আমরাও সেখানে সহযোগিতা করব। যারা সঠিকভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে না, নিরাপদ পোলট্রি ফার্ম ব্যবস্থাপনা করে না, তাদের চিহ্নিত করুন, সতর্ক করুন। তারপরও কাজ না হলে সেই পোলট্রি বন্ধ করে দিন।

ওয়ার্ল্ড পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বলেন, ‘আমরা গবেষণা করে দেখিয়েছি বাংলাদেশে উৎপাদিত মুরগি স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল এ নিয়ে অপপ্রচার করে শিল্পের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছিল। আমরা তা থামিয়ে দিতে সমর্থ হয়েছি।’