ঢাকা ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পণ্য বহুমুখীকরণে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চায় বিজিএমইএ

পণ্য বহুমুখীকরণে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চায় বিজিএমইএ

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী পোশাকশিল্প উদ্যোক্তাদের পণ্য বহুমুখীকরণের ওপর জোর দিতে বলেছেন। আমরা মনে করি, তার ঐকান্তিক সহায়তায় বিগত বছরগুলোতে বাজার বহুমুখী করতে সক্ষম হয়েছি। একইভাবে যদি সরকারের নীতিগত সহায়তা পাই, তবে পণ্য বহুমুখীকরণেও বিশেষ করে নন-কটন খাতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে সফল হবেন খাত সংশ্লিষ্টরা। গতকাল শনিবার বিজিএমইএ’র উত্তরার কার্যালয়ে ‘পোশাক শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি’ নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফারুক হাসান। এ সময় বিজিএমএর ভাইস প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন, পরিচালনা পর্ষদ সদস্যসহ খাত সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে ফারুক হাসান বলেন, ক্রেতারা বর্তমানে বড় অর্ডার না দিয়ে ছোট ছোট স্লটে অর্ডার দিচ্ছেন, ফলে কারখানা পর্যায়ে আমাদের উৎপাদন পরিকল্পনা বিপর্যস্ত হচ্ছে। করোনার ক্ষত সেরে ওঠতে না ওঠতেই আমরা নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। সাম্প্রতিক সময়ে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে এক অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যার প্রভাব পড়েছে আমাদের অর্থনীতি ও শিল্পে।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমাদের প্রধান বাজারগুলোতে বিশেষ করে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে। এসব উন্নত দেশের ভোক্তারা ভোগ্যপণ্যের ব্যয় কমিয়ে দিয়েছেন, ফলে কমে আসছে পোশাকের চাহিদা। তাই, পোশাকের অর্ডার কমিয়ে দিয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে অব প্রাইস বা ডিসকাউন্টেড পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়ছে। আবার আমরা দেখছি যে ক্রেতারা তাদের সোর্সিং কৌশল পরিবর্তন করছেন, একসঙ্গে বড় অর্ডার না দিয়ে ছোট ছোট স্লটে অর্ডার দিচ্ছেন, ফলে কারখানা পর্যায়ে আমাদের উৎপাদন পরিকল্পনা বিপর্যস্ত হচ্ছে। বিজিএমইএ নেতারা বলেন, বর্তমান সময়ে আন্তর্জাতিক ভোক্তাদের আচরণেও বেশ পরিবর্তন এসেছে। তারা এখন সার্কুলার ফ্যাশন ও রিসাইকল পণ্যের ব্যাপারে অনেক বেশি আগ্রহী। সার্কুলার ফ্যাশন আজ সাসটেইনেবল ফ্যাশন এজেন্ডার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা এরই মধ্যে অপচয় কমিয়ে আনা ও সম্পদের পরিমিত ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য কারখানাগুলোর সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের কারখানাগুলো নতুন নতুন টেকনোলজি ব্যবহার ও প্রসেস আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে তাদের অপচয় কমিয়ে আনছে। এখন আমরা পোস্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়েস্ট বা ঝুট কাপড় পুনরায় কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। বর্তমানে প্রতিবছর টেক্সটাইল ও পোশাক খাত থেকে প্রায় ৫ লাখ টনের মতো ঝুট তৈরি হয়। এর একটি অংশ আমরা প্রায় রপ্তানি করে থাকি, যার মাধ্যমে বছরে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার আয় হয়। আমরা যদি এ ঝুটগুলোকে রিসাইকেল করতে পারি তবে তা দিয়ে আমরা প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পণ্য উৎপাদন করতে পারব, যা আমাদের দেশজ সম্পদে প্রবৃদ্ধি আনবে। এ বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছি যেন রিসাইকেলিং শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রক্রিয়া, পণ্য ও সেবাকে শুল্ক ও ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখা হয়। ফলে বিনিয়োগকারীরা এই খাতে বিনিয়োগে আকৃষ্ট হবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত