এনবিআরের ঘাটতি ২৩ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) আট মাসে ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা। ৮.৯২ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পিছিয়ে আছে এখনো ৪৭.০২ শতাংশ। এর আগে জানুয়ারি পর্যন্ত ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১৭ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। এনবিআরের পরিসংখ্যান বিভাগের সাময়িক হিসাব বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ২ লাখ ১৯ হাজার ১৫ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩৭ দশমিক ৫১ কোটি টাকা। অর্থাৎ ঘাটতি ২২ হাজার ৯৭৮ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা। সেই হিসেবে লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে রয়েছে ৪৭.০২ শতাংশ। আর আট মাসে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৮.৯২ ভাগ।

রাজস্ব আদায়ের পরিসংখ্যানে আরো দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাস মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটের আদায় হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এ খাতে আদায় হয়েছে ৭৬ হাজার ৪০১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। সবচেয়ে বেশি ১৫.০৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ঘাটতি হয়েছে ৫ হাজার ৭৩৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।

এর পরের অবস্থান আয়কর ও ভ্রমণ করের। এ খাতে আদায়কৃত রাজস্বের পরিমাণ ৬০ হাজার ৪৩৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা। এখানে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার ৭৫৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা পিছিয়ে আছে। একই সময়ে আমদানি ও রপ্তানি পর্যায়ে শুল্ক-কর আদায় হয়েছে ৫৯ হাজার ১৯৮ কোটি ৭ লাখ টাকা। ঘাটতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি ১৩ হাজার ৮১৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধিও সবচেয়ে কম মাত্র ৪.৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ আমদানি ভাটা পড়ার প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আদায়েও। চলতি বছরে এনবিআরকে বিদায়ী অর্থবছরের (২০২১-২২) তুলনায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়। বিদায়ী অর্থবছরে সব মিলিয়ে ৩ লাখ ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছিল এনবিআর। ঘাটতি ছিল প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে (জুলাই-জুন) এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয় ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমদানি ও রপ্তানি পর্যায়ে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ১১ হাজার কোটি, মূসক আদায়ে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকা এবং আয়কর খাতে ১ লাখ ২২ হাজার ১০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। পুরো অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাকি চার মাসে এনবিআরকে আরো প্রায় ১ লাখ ৭৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে হবে।

এ বিষয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, দেশের ভেতরে রাজস্ব আদায়ের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। যেমন- করের আওতা বৃদ্ধি করা, কর বৈষম্য ও কর ফাঁকি দূর করা ইত্যাদি। যেটা এনবিআর পারবে কী না সেটাই বড় প্রশ্ন? কর আদায়ের সক্ষমতা যদি বৃদ্ধি করা যায়, তাহলে বলব এনবিআরের এমন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। তিনি বলেন, জনগণের ক্রয়ক্ষমতা যদি ঠিক রাখা যায়, তাহলে ভ্যাট আদায়ও বৃদ্ধি পাওয়ার কথা। আর একটি বিষয় হচ্ছে রপ্তানি। বৈশ্বিক কারণে এ সেক্টরে প্রভাব পড়তে পারে। তবে এর সঙ্গে সরাসরি রাজস্ব আদায়ের সম্পর্ক নেই।