ঢাকা ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দাবদাহে এসি বিক্রি বেড়েছে দ্বিগুণ

দাবদাহে এসি বিক্রি বেড়েছে দ্বিগুণ

কয়েক দিনের টানা তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। ৩৮ থেকে ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রা ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে দুঃসহ জীবনযাপন করছেন নগরবাসী। ৫৮ বছর পর তাপমাত্রার রেকর্ড গড়েছে রাজধানীতে। গরম থেকে কিছুটা রক্ষা পেতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) দোকানে ভিড় করছেন নগরবাসী। সাধ্যের মধ্যে এসি কিনতে ক্রেতারা ঘুরে বেড়াচ্ছেন একাধিক ইলেকট্রনিকসের শো-রুমগুলোতে। বিক্রেতারা বলছেন প্রতি বছর গরমে এসি বিক্রি বাড়ে তবে এটা এবার দ্বিগুণ হয়েছে। মিরপুরে শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা ফাহমিদা আফরোজ বেশ কয়েকটি শো-রুম ঘুরে সেনপাড়ার একটি শো-রুম থেকে দেড় টনের একটা এসি কিনেছেন। প্রথমে এসি কিস্তিতে কিনবেন চিন্তা করেছিলেন। কিন্তু ডাউন পেমেন্ট ও কিস্তিতে এসির মূল্য বেশি পড়বে ভেবে এককালীন টাকা পরিশোধে করে তিনি এসিটি ক্রয় করেছেন।

তিনি বলেন, পাঁচতলা বাসার টপ ফ্লোরে বসবাস করি, বাচ্চারা এ গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। দিনের বেলা সূর্যের তাপে বাসায় থাকা যায় না এবং রাতেও ঘুমাতে পারি না। কোনোভাবেই গরম সহ্য করতে না পেরে দুই দিন বিভিন্ন কোম্পানির শো-রুম ঘুরে সুলভ মূল্যে একটি দেড় টন এসি কিনলাম। ভেবেছিলাম কিস্তিতে এসি ক্রয় করব কিন্তু এতে করে আমাকে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার বেশি গুণতে হবে, তাই কষ্ট করে হলেও নগদেই কিনে নিলাম। এদিকে গরমের কারণে এ বছর এসি বিক্রি দ্বিগুণ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন শেওড়াপাড়ার ওয়ালটন প্লাজায় কর্মরত মো. আমিনুর রহমান। তিনি বলেন, প্রতি বছরই এ সময় এসি বিক্রি বেড়ে যায়, তবে কয়েক দিনের তীব্র গরমে প্রচুর এসি বিক্রি হচ্ছে। সারা দিনই আমরা এসি বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছি। তবে এসির দাম ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে। প্রতিনিয়ত যেভাবে গরম বাড়ছে তাতে ফ্যানের বাতাসে স্বাভাবিক থাকা সম্ভব হচ্ছে না। তাই কিস্তিতে একটি এসি কিনব বলে জানালেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আতিকুর রহমান। তিনি বলেন, কিস্তি সুবিধা থাকায় আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো এ গরমে এসি কিনতে সাহস করছেন। এছাড়া বিদ্যুৎ বিলের ভয়ে আগে কখনো এসি কিনতে সাহস করিনি। তবে কোম্পানিগুলো বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার এসি বাজারে আনায় আমার মতো অনেকেই এসি কিনছেন।

অন্যদিকে, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এসি ক্রয় করেও ফিটিংসে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে গ্রাহকদের। চাহিদা বাড়ার কারণে এসি নির্ধারিত সময়ে ডেলিভারি দিতে পারছেন না শো-রুমগুলো। হঠাৎ চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কিছুটা সমস্যা হচ্ছে বলে জানালেন মিরপুরের মনিপুরের বেগম রোকেয়া সরণিতে অবস্থিত গ্রীন এয়ার শো-রুমের এক সেলস কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আমাদের এখানে ২৫ জন ইলেকট্রিশিয়ান কাজ করছেন অর্ডার বেশি থাকায় কিছুটা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে, তারপরও নির্ধারিত সময়েই ডেলিভারির চেষ্টা করছি। একটি এসি ফিটিংস করতে দুইজন লোক লাগে। সকাল থেকে শুরু করে সারা দিনে তিন থেকে চারটি এসি ফিটিংস করা যায়। ২৫ জন লোক কাজ করেও কুলাতে পারছে না। অথচ মাসখানেক আগেও কোনো কোনো দিন একটি ফিটিংসের কাজ হতো না বলে জানালেন একই প্রতিষ্ঠানের ইলেকট্রিশিয়ান (এসি মিস্ত্রী) মো. হৃদয়। তিনি বলেন, প্রায় ৮ বছর ধরে এ প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছি, প্রতি বছর গরমে কাজ বেড়ে যায় কিন্তু এ বছর কাজের এতটাই চাপ যে দম ফেলার সময় পাচ্ছি না। তবে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যেভাবে তাপমাত্রা বাড়ছে আগামীতে দেশে এসির চাহিদা কয়েকগুণ বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত