ঈদের আগে শেষ সপ্তাহে শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া তিন কার্যদিবসের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। এতে বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতি। ঈদের আগে শেষ সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বাজার মূলধন সাড়ে ৮০০ কোটি টাকার ওপরে বেড়ে গেছে। প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে দশমিক ২২ শতাংশ। আর দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ৯ শতাংশের বেশি। বাজার মূলধন, সূচক ও লেনদেন বাড়লেও তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা সংকট ছিল গত সপ্তাহজুড়েই। ফলে ২০০’র বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। ঈদের আগের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল সাত লাখ ৬৩ হাজার ২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ, গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৮৬২ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়ার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে। এদিকে, গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট ৩৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া এ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৭৮টির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৪টির। আর ২৫০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা দশমিক ২২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে দশমিক ৯৮ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। এর মাধ্যমে টানা তিন সপ্তাহ ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়লো। প্রধান মূল্যসূচকের সঙ্গে বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৩ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট বা দশমিক ১৪ শতাংশ। ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচকও বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে ১ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বা দশমিক ১৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।
সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৯১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৪৭ কোটি ২১ লাখ টাকা টাকা। অর্থাৎ, প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৪৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বা ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনিক হোটেলের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০৭ কোটি ৮৯ লাখ ৫ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেমিনি সি ফুডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৬ কোটি ৭২ লাখ ২১ হাজার টাকা। ৮৫ কোটি ৩৬ লাখ ৪৭ হাজার টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আমরা নেটওয়ার্ক।