কর্মীদের রিটার্ন জমা দেওয়ার তথ্য, অর্থাৎ তাদের নাম, টিআইএন (কর শনাক্তকরণ নম্বর) ও কর অঞ্চল ইত্যাদি সুনির্দিষ্ট সার্কেলে জানাতে হয় প্রতিষ্ঠানকে। প্রতি বছর ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এসব তথ্য দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। চলতি বছরে এই সময় শেষ হতে বাকি আর মাত্র পাঁচ দিন, এর মধ্যে আবার শুক্র ও শনিবার বা সাপ্তাহিক ছুটি। তাই নির্ধারিত সময়ের আগেই কর্মীদের রিটার্ন জমা দেওয়ার তথ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে জানাতে হবে। অন্যথায় গুনতে হবে জরিমানা।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক কর্মকর্তা জানান, এরই মধ্যে বহু প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের আয়কর রিটার্নের তথ্য নিজ নিজ আয়কর সার্কেল অফিসে পাঠিয়ে দিয়েছে। আর অনেক প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সময়ে এই তথ্য দেবে বলে সার্কেল অফিসকে জানিয়েছে।
আইন অনুযায়ী, ৩০ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে তাদের বেতনভুক্ত চাকরিজীবীদের মধ্যে কারা আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন, সেই তথ্য আয়কর অফিসকে জানাতে হবে। অন্যথায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে গুনতে হবে জরিমানা। কোনো কর্মী যদি তার রিটার্ন জমার তথ্য না জানায় তাহলে প্রতিষ্ঠানটি ওই ব্যক্তির বেতন-ভাতা বাবদ খরচের হিসাব দেখাতে পারবে না।
এছাড়া আয়কর আইন অনুযায়ী কোনো কর্মী রিটার্নের তথ্য না জানালে, ওই কর্মীর বেতনের ওপর ৩০ শতাংশ হারে কর আরোপ হবে। দেশে বর্তমানে কোম্পানি করদাতা হিসেবে ১ লাখ ৬৬ হাজার প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত আছে। এর মধ্যে বছরে ২৮ থেকে ২৯ হাজার কোম্পানি রিটার্ন জমা দেয়। বর্তমানে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের মধ্যে প্রতি বছর রিটার্ন জমা দেন প্রায় ৩০ লাখ টিআইএনধারী। আর বেসরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে ৭ লাখের মতো রিটার্ন জমা দেন।
২০১৬ সালের বাজেটে আয়কর অধ্যাদেশে (সংশোধন) বলা হয়, যে কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পর্যায়ের কর্মীদের টিআইএন দেওয়া বাধ্যতামূলক। প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা টিআইএন না নিলে খড়গ পড়বে প্রতিষ্ঠানের ওপর।
কারণ আয়কর অধ্যাদেশের ৩০ ধারা সংশোধন করে বলা হয়েছে, কোনো কর্মী টিআইএন না নিলে ওই কর্মীর বেতন-ভাতাকে খরচ হিসেবে দেখাতে পারবে না নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান। পরে অবশ্য এই শর্ত শিথিল করা হয়।
যদিও পরের বছর চাকরিজীবীদের জন্য শুধু টিআইএন দেয়া বাধ্যতামূলক নয়; রিটার্ন দেয়াও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পাশাপাশি চাকরিজীবীর প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে, আয়কর অধ্যাদেশের ১০৮ (এ) ধারা অনুযায়ী, প্রতি বছর ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ওই প্রতিষ্ঠানের কোন কোন কর্মী রিটার্ন জমা দিয়েছেন তাদের নাম, টিআইএন, কর অঞ্চল, সার্কেল ইত্যাদি তথ্য জানাতে হবে।