তিন মাস অন্তর মিলবে দেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্যের খবর

প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

তিন মাস অন্তর জানা যাবে দেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্য। এজন্য প্রথমবারের মতো করা হচ্ছে কোয়ারলি জিডিপি (কিউজিডিপি) হিসাব। প্রতি ৩ মাসে হিসাব প্রকাশ করায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) আরো একধাপ এগিয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৩৭টি দেশ এভাবে হিসাব প্রকাশ করে থাকে। আগামীতে এর সঙ্গে যুক্ত হবে বাংলাদেশের নাম। গতকাল বুধবার এ বিষয়ে স্টেকহোল্ডার কর্মশালায় এসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিবিএস অডিটরিয়ামে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য আহাম্মদ উল্লাহ এবং অর্থবিভাগের অতিরিক্ত সাচিব রেহেনা পারভীন। কর্মশালায় জানানো হয়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সম্প্রতি মোট দেশজ উৎপানের (জিডিপি) ভিত্তি বছর ২০০৫-০৬ এবং ২০১৫ থেকে ২০১৬ তে পরিবর্তনের কাজ শেষ করেছে। বর্তমানে ২০১৫-১৬ কে ভিত্তি বছর ধরে বার্ষিক জিডিপি প্রাক্কলন ও প্রকাশ করা হচ্ছে। নতুন ভিত্তিবছরের জিডিপি প্রাক্কলনের জন্য বিবিএস দেশের অর্থনীতির ১৯টি খাতের মূল্য সংযোজন প্রাক্কলন করে থাকে। সরকারের সিদ্ধান্তের জন্য এ পর্যায়ে বিবিএস বার্ষিক জিডিপি প্রাক্কলনের পাশাপাশি ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রাক্কলনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এর মধ্যে বিবিএস আইএমএফের কারিগরি সহায়তায় আন্তর্জাতিক দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত সময়ের ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রাক্কলনের কাজ শেষ করেছে।

ত্রৈমাসিক জিডিপি অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণের একটি স্বল্পমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নির্দেশক হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিবিএস ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রাক্কলনের জন্য বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তর, সংস্থা থেকে সেকেন্ডারি ডাটা ব্যবহার করছে। ফলে ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রাক্কলনের সঙ্গে অন্য সংস্থার যথেষ্ট সংশ্লিষ্ট রয়েছে।

বিদ্যমান পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত প্রাক্কলিত ত্রৈমাসিক জিডিপি জুন ২০২৩ সালের মধ্যে প্রকাশ করা হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম কোয়ার্টারের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ত্রৈমাসিক জিডিপি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশ করা হবে। আন্তর্জাতিক গাইডলাইন অনুযায়ী কোনো কোয়ার্টার অতিক্রম হওয়ার পরবর্তী ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রকাশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এছাড়া ত্রৈমাসিক জিডিপি একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসাবে পরবর্তীতে নিয়মিতভাবে প্রকাশ করা হবে।

ড. শাহনাজ আরেফিন বলেন, ‘দুই বছর আগে থেকেই বিবিএস ৩ মাসের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হিসাবের উদ্যোগ নিয়েছে। এরইমধ্যে ব্যাক ক্যালকুলেশনসহ প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শেষ করা হয়েছে। এখন আইএমএফ এটি করতে বলছে। বিবিএস এককভাবে এ কাজ করতে পারবে না। বিভিন্ন সরকারি সংস্থা থেকে তথ্য সরবরাহ করতে হবে। এই তথ্য সঠিক ও নির্ভুল হতে হবে। তথ্যেও ক্ষেত্রে ভুল হলে চলবে না। আমরা এখন উন্নত দেশে যাচ্ছি। ফলে আমাদের সব কিছুই উন্নত হতে হবে, এটা সময়ের দাবি।’ মো. মতিয়ার রহমান বলেন, ‘তথ্য অন্যের কাছ থেকে নিয়ে আসাটা সহজ কাজ নয়। জিডিপি হচ্ছে উৎপাদন বেইজ, এটা খরচ বেইজ নয়। উৎপাদনের তথ্য পাওয়া একটা কঠিন কাজ। কিন্তু এখন সেটি সহজে করা যাচ্ছে। এই কাজটি আমাদের বিশুদ্ধতার সঙ্গে করতে হবে।’ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বক্তব্য দেন বিবিএসের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং উইংয়ের পরিচালক জিয়াউদ্দীন আহমেদ। এ সময় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- উপপরিচালক ও কিউজিডিপি কার্যক্রমের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।