ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

যাত্রীরা এনেছেন ৪৫ হাজার কোটি টাকার স্বর্ণ

যাত্রীরা এনেছেন ৪৫ হাজার কোটি টাকার স্বর্ণ

এক বছরে দেশে বিমানযাত্রীদের মাধ্যমে বৈধভাবে ৪৬ লাখ ভরির সমপরিমাণ ৫৪ টন স্বর্ণের বার এসেছে। এর বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা। ২০২২ সালে ঢাকার শাহজালাল এবং চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে এই স্বর্ণ আসে। আগের বছরের তুলনায় তা ৫৩ শতাংশ বেশি। ৪৬ লাখ ভরি স্বর্ণ এনেছেন যাত্রীরা। একই সময়ে শুধু শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবৈধ স্বর্ণ জব্দ করা হয় প্রায় ৫০০ কেজি বা ৪২ হাজার ৯১৫ ভরি। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে জব্দ হওয়া অবৈধ স্বর্ণ হিসাব পাওয়া যায়নি। বৈধভাবে স্বর্ণ আনা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় রাজস্ব আয় বাড়লেও প্রবাস আয় বা রেমিট্যান্সে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে অনেক প্রবাসীর ক্ষেত্রে এটা সরাসরি ডলার নিয়ে আসাকে নিরুৎসাহ করছে। কারণ, স্বর্ণ বিক্রি করে তারা কিছু লাভ পাচ্ছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২০ সালে প্রথম দুটি স্বর্ণের বার শুল্ক পরিশোধ করে বৈধভাবে আনার সুযোগ দেয়। অভিযোগ উঠেছে, বাণিজ্যিক আমদানির চেয়ে ব্যাগেজ রুলসের মাধ্যমে স্বর্ণ আনার খরচ কম হওয়ায় ব্যবসায়ীদের অনেকে এই পথে স্বর্ণ আনছেন। আইনত বৈধ বলে তা আটকানোর সুযোগ নেই। কিন্তু এতে সরকার রাজস্ব কম পাচ্ছে। তাই ব্যাগেজ রুলস সংশোধনের দাবি করছেন প্রকৃত ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশে স্বর্ণের চাহিদা আছে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মেট্রিক টন। বাকি স্বর্ণ পাচার করা হচ্ছে। একে কেন্দ্র করে মানি লন্ডারিং হচ্ছে। রেমিট্যান্স কমছে।

বাংলাদেশে যত স্বর্ণের বার আসে তার ৯৫ শতাংশই আসে দুবাই, আবুধাবি, শারজা থেকে আসা ফ্লাইটে। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রতি মাসে গড়ে পৌনে ২ টন স্বর্ণের বার ঢুকছে। স্বর্ণের বার হিসাব করলে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ হাজার পিসের বেশি। বিমানের যাত্রীরা ঘোষণা দিয়ে শুল্ক পরিশোধ করেই এগুলো আনছেন। বিপরীতে প্রতি মাসে সরকার রাজস্ব পাচ্ছে ৩৯ কোটি টাকার মতো। ২০২২ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ স্বর্ণের বার আনার রেকর্ড হয়, যার পরিমাণ প্রতি মাসে গড়ে দেড় হাজার কেজি। চলতি বছরে স্বর্ণের বার আনার পরিমাণ গত বছরের চেয়েও বেড়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টমসের হিসাবে, গত তিন মাসে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে ৪৫ হাজার ২৭৭টি স্বর্ণের বার ঘোষণা দিয়ে এসেছে। এর পরিমাণ ৫ হাজার ২৯৭ কেজি। দুই বিমানবন্দরের তথ্যে দেখা যায়, ২০২০ সালে সাড়ে ৫ টন, ২০২১ সালে ৩৫ টন এবং ২০২২ সালে প্রায় ৫৪ টন স্বর্ণ এসেছে।

২০২০ সালে অবশ্য করোনার কারণে উড়োজাহাজে যাত্রী পরিবহন কম হয়েছিল। ওই বছর ২৩ হাজার ৬৭৪ জন, ২০২১ সালে ১ লাখ ৫১ হাজার ৯১৭ জন এবং ২০২২ সালে প্রায় ২ লাখ ৩২ হাজার যাত্রী স্বর্ণ এনেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকে এখন স্বর্ণ মজুত আছে ১৪ টন। দেখা যাচ্ছে, এর চেয়ে অনেক বেশি স্বর্ণ চলে আসছে যাত্রীদের হাত ধরে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে বৈধ পথে দুইভাবে স্বর্ণ আমদানি করা যায়। ২০১৮ সালের স্বর্ণ নীতিমালার আওতায় লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তি নিয়ে স্বর্ণ আমদানি করতে পারে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত