সন্ত্রাস দমন প্রকল্পে গাড়ি আমদানি

শুল্ক-করের ১৬৩ কোটি টাকা বিলম্বে দিতে চায় পুলিশ

প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

সন্ত্রাস দমন ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ১০টি অত্যাধুনিক সশস্ত্র যান আমদানি করে। তবে প্রকল্পে তহবিলের অভাবে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে গাড়িগুলো খালাস করতে পারছে না। ‘সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এসব গাড়ি সংগ্রহ করা হয়েছে। জাপান সরকারের অনুদানে প্রাপ্ত এই ১০টি আর্মড ভেহিক্যালের শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ ১৬৩ কোটি ৬৩ লাখ ৫৬ হাজার ৪৩৫ টাকা ডেফার্ড পেমেন্টের (বিলম্বে পরিশোধ) মাধ্যমে ছাড়ের অনুমতি দিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি। সম্প্রতি এনবিআর চেয়ারম্যানকে পাঠানো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপ-সচিব ও পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি গাজী মো. মোজাম্মেল হক স্বাক্ষরিত দুটি চিঠিতে এই অনুরোধ জানানো হয়।

পুলিশের চিঠিতে বলা হয়, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি, রাত্রিকালীন পুলিশের অপারেশন পরিচালনার জন্য ৫টি ফ্লাডলাইট ভেহিক্যাল, ১০টি আর্মড ভেহিক্যাল এবং বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তার জন্য ২০টি এসকর্ট ভেহিক্যাল সংগ্রহ করা হবে। এই প্রকল্পের বিশেষায়িত যানবাহনসমূহ জাপানস এইড ফর ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্টের অধীনে জাপান সরকার তার অনুমোদিত এজেন্সি জেআইসিএসের মাধ্যমে জাপান থেকে ক্রয় করে বাংলাদেশ পুলিশ অধিদপ্তরকে সরবরাহ করবে।

প্রকল্পের আওতায় ১০টি আর্মড ভেহিক্যাল চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। কাস্টমস যানবাহনসমূহের সিডি ও ভ্যাট ১৬৩ কোটি ৬৩ লাখ ছাপান্ন হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে। মূল ডিপিপিতে এ খাতে মোট ৩৯ দশমিক ৩২ কোটি টাকার সংস্থান ছিল। অন্যদিকে জননিরাপত্তা বিভাগ জানায়, প্রকল্পের জন্য রিলিজিং তহবিল বিলম্বিত হওয়ায় বিভিন্ন অর্থ প্রদানের মাধ্যমে এসব যানবাহন ছেড়ে দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে এনবিআরকে অনুরোধ করা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ২০১৯ সালে প্রকল্পটি অনুমোদন করে। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ৭৯ দশমিক ৬৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপান সরকারের সাহায্য ৩৯ দশমিক ৫৮ কোটি টাকা এবং জিওবি ৪০ দশমিক শূন্য ৮ কোটি টাকা। যেখানে মূল উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) সিডি এবং ভ্যাটের জন্য ৩৯ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, একনেক মার্চ মাসে প্রথম সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদন করে যখন প্রকল্পের আরডিপিপি সিডি (বন্দর শুল্ক) ও ভ্যাটে অতিরিক্ত ব্যয়ের বিধানের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। আরডিপিপি অনুযায়ী, প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০৯ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা।

চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, মূলত প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাবটি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য আরএডিপি প্রক্রিয়াকরণের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে একনেক দ্বারা অনুমোদিত হয়নি, তাই সংশোধিত বাজেটে প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। বরাদ্দের অনুমোদনের পর সিডি এবং ভ্যাটের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদান বর্তমান আর্থিক বছরের মধ্যে সাফ করা হবে। ২০১৬ সালে ঢাকার হলি আর্টিজান ক্যাফেতে সন্ত্রাসী হামলা এবং অন্যান্য সমসাময়িক সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, জাপান সরকার সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অনুদান দিয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। এসব বিবেচনায় নিয়ে ১৬৩ কোটি টাকা ডেফার্ড পেমেন্টের মাধ্যমে নেয়ার শর্তে গাড়ি খালাসের অনুরোধ জানিয়েছে সংস্থাটি।