ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রপ্তানি পোশাকের প্রায় ৫০ শতাংশের ক্রেতা ইইউ

অপ্রচলিত পণ্যের বাজারে ৩০.৮০ শতাংশ অবস্থান
রপ্তানি পোশাকের প্রায় ৫০ শতাংশের ক্রেতা ইইউ

বাংলাদেশের অর্থনীতি চাঙ্গা রয়েছে দুটি খাতের কারণে। একটি তৈরি পোশাক, অপরটি প্রবাসী রেমিট্যান্স। এ পোশাকের প্রায় ৫০ শতাংশের ক্রেতা ইইউ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিলের জন্য দেশভিত্তিক রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করেছে। তথ্যানুযায়ী, ১৯ দশমিক ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পোশাক (মোট রপ্তানির ৪৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ) ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে গেছে। গতকাল শনিবার বিজিএমইএ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এই সময়ে মোট পোশাক রপ্তানি পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় নয় দশমিক ০৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধিসহ ৩৮ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। মোট পোশাক রপ্তানির মধ্যে ছয় দশমিক নয় বিলিয়ন ডলারের পোশাক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি করা হয়েছে। যা মোট রপ্তানির ১৮ দশমিক ০১ শতাংশ ছিল; কানাডার শেয়ার ছিল তিন দশমিক ১৯ শতাংশ এবং মোট এক দশমিক দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পোশাক কানাডায় রপ্তানি করা হয়েছে। এবং সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি হয়েছে অপ্রচলিত বাজারে, যার ১৮ দশমিক ১৬ শতাংশ শেয়ার ছিল। উল্লিখিত সময়ের মধ্যে ইইউতে আমাদের রপ্তানি ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আট দশমিক ৫৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইইউ অঞ্চলের প্রধান বাজারগুলোর মধ্যে, জার্মানিতে আমাদের রপ্তানি উল্লিখিত সময়ে পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় সাত দশমিক ৩৩ শতাংশ হ্রাস পেয়ে পাঁচ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। ফ্রান্স এবং স্পেনে আমাদের পোশাক রপ্তানি ছিল যথাক্রমে দুই দশমিক ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ও দুই দশমিক ৯৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ২২ দশমিক ২১ শতাংশ এবং ১৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ইতালিও ৪২ দশমিক ৪০ শতাংশ ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির প্রবণতা দেখিয়েছে এবং এক দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।

অন্যদিকে, বুলগেরিয়া ও পোল্যান্ডে আমাদের রপ্তানি বছরওয়ারিভাবে যথাক্রমে ৪৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং ১৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। হতাশাব্যাঞ্জক প্রবণতা অনুসরণ করে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের রপ্তানিতে সাত দশমিক ১৩ শতাংশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে এবং ছয় দশমিক ৯৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। অধিকন্তু, যুক্তরাজ্য এবং কানাডায় উভয় বাজারে রপ্তানিতে যথাক্রমে ১০ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং ১৬ দশমিক ০৯ শতাংশ ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল মাসে, অপ্রচলিত বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ৩০ দশমিক ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।

অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো প্রধান বাজারগুলোতে আমাদের রপ্তানি ছিল যথাক্রমে এক দশমিক ৩২ বিলিয়ন, ৯৬১ দশমিক ৩০ মিলিয়ন, ৮৮৯ দশমিক ০৬ মিলিয়ন এবং ৪৭৭ দশমিক ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বিজিএমইএর পরিচালক ও ডেনিম এক্সপোর্ট লি. এর অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘যদিও আমাদের রপ্তানির অর্থমূল্য বেড়েছে, সেটা উচ্চমূল্যের কারণে। কিন্তু, সেভাবে আমাদের ক্রয়াদেশ বাড়েনি। আমাদের খুবই সতর্ক হতে হবে আমাদের প্রচলিত বাজার নিয়ে, সেইসঙ্গে অপ্রচলিত বাজারের দিকেও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ। ইইউ অঞ্চলের প্রধান বাজারগুলোর মধ্যে জার্মানিতে আমাদের রপ্তানি কমেছে। এ সময়ে জার্মানিতে রপ্তানি কমে হয়েছে ৫ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় জার্মানিতে ৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ রপ্তানি কমেছে। আলোচ্য সময়ে ফ্রান্স এবং স্পেনে পোশাক রপ্তানি হয়েছে যথাক্রমে ২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ও ২ দশমিক ৯৫ বিলিযন মার্কিন ডলার। এ সময়ে দেশ দুটিতে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয় যথাক্রমে ২২ দশমিক ২১ শতাংশ এবং ১৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ইতালিও ৪২ দশমিক ৪০ শতাংশ ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির প্রবণতা দেখিয়েছে। দেশটিতে এক দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। তবে, বুলগেরিয়া এবং পোল্যান্ডে রপ্তানি কমেছে। এ সময়ে দেশ দুটিতে যথাক্রমে ৪৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং ১৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ পোশাক রপ্তানি কমেছে।’ তিনি বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৬ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। একই সময়ে যুক্তরাজ্য এবং কানাডায় যথাক্রমে ১০ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং ১৬ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে অপ্রচলিত বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ৩০ দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়ে ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। এটা আমাদের জন্য অনেক ইতিবাচক দিক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত