মূল্যবান ধাতু স্বর্ণে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। ২০২২ সালের এই ধারা এ বছরও অব্যাহত রয়েছে।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল (ডাব্লিউজিসি) তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানায়, বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ প্রান্তিকে বিশ্বে স্বর্ণের চাহিদা ১৩ শতাংশ কমে হয়েছে এক হাজার ৮০ দশমিক আট টন। যেখানে এক বছর আগে ২০২২ সালের এ সময়ে স্বর্ণের চাহিদা ছিল এক হাজার ২৩৮ দশমিক পাঁচ টন। তবে সার্বিকভাবে স্বর্ণের চাহিদা কমলেও বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। প্রতিবেদনে বলা হয়, বছরের প্রথম প্রান্তিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো স্বর্ণের মজুদ বাড়িয়েছে ২২৮ টন, যা রেকর্ড। এক বছর আগের এ সময়ে মজুদ বাড়ানো হয় মাত্র ৮৩ টন। স্বর্ণে বিনিয়োগ বৃদ্ধির এ ধারা বছরজুড়েই অব্যাহত থাকবে। সবচেয়ে বেশি স্বর্ণ কিনেছে সিঙ্গাপুর, চীন ও তুরস্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর পাশাপাশি রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়াও কিনেছে সাত টন। ডলারের বিনিময়ে স্বর্ণ : বিশ্বের অনেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঠিক এই কাজটিই করছে এখন। যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে এসব দেশ পথ খুঁজছিল। ডলার ছেড়ে দিয়ে স্বর্ণের মজুদ বাড়ানোই তাদের কাছে মনে হয়েছে সবচেয়ে নিরাপদ পথ। কোন দেশ কী পরিমাণ স্বর্ণ মজুদ করছে, তার হিসাব রাখা শুরু হয় ১৯৫০ সালে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল বলছে, সেই সময়ের পর থেকে পাওয়া হিসাবে দেখা গেছে, গত বছরই সবচেয়ে বেশি স্বর্ণের মজুদ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বৈশ্বিক বাণিজ্যে ডলার সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে। একই সঙ্গে এটি বৈদেশিক মুদ্রা মজুদের প্রধান মুদ্রা; কিন্তু রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ বিশ্বব্যবস্থাকেই ঝাঁকি দিয়েছে। ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে ব্যবস্থা নিচ্ছে, দেখে মনে হয় তা ডলারের বিপক্ষে অবস্থান। বিশ্লেষকরা অবশ্য মনে করেন না যে আমূল কোনো পরিবর্তন হতে যাচ্ছে। তারা বলছেন, আরো অনেক বছর ডলার তার আধিপত্য বজায় রাখবে। তবে যা ঘটছে, তার দিকে নজর রাখছেন সবাই।