ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জি৭ নেতাদের নিশানায় রাশিয়ার জ্বালানি ও বাণিজ্য

জি৭ নেতাদের নিশানায় রাশিয়ার জ্বালানি ও বাণিজ্য

জাপানে অনুষ্ঠেয় ধনী দেশগুলোর জোট জি৭-এর বৈঠকে রাশিয়ার ওপর আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছেন জোটের নেতারা। এবার তারা মস্কোর জ্বালানি ও বাণিজ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সরাসরি আলোচনা করবেন বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে। খবর : রয়টার্স।

রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন সময় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জি৭-ভুক্ত দেশগুলো। তবে দেশটি নানাভাবে তা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে। তাই এবার জোটটি রাশিয়ার ওপর আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চায়। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি সপ্তাহে জাপানে অনুষ্ঠেয় জি৭-এর বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

আগামী ১৯ থেকে ২১ মে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে মূলত নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর বিষয়টি আমলে নেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে যেসব তৃতীয় দেশের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, তাদের প্রসঙ্গও সেখানে থাকবে। রাশিয়ার যুদ্ধের সক্ষমতা বিনষ্ট করতে দেশটির জ্বালানি উৎপাদন ও বাণিজ্য হ্রাস করতে ব্যবস্থা নেবে জি৭।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাশা করছে, জি৭-ভুক্ত সদস্য দেশগুলো নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তাদের মনোভাবে সমন্বয় আনবে, অন্তত বিশেষ কয়েকটি পণ্যের ক্ষেত্রে। এ ক্ষেত্রে বিষয়টি হবে, অনুমোদিত পণ্যের তালিকার মধ্যে না পড়লে সব পণ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। এর আগে বাইডেন প্রশাসন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে মনোভাব বদলাতে জি৭-কে চাপ দিয়েছে। এখন বলা হচ্ছে, কালো তালিকাভুক্ত না হলে সব পণ্য রাশিয়ায় বিক্রি করা যাবে। এই পরিবর্তন এলে মস্কোর পক্ষে নিষেধাজ্ঞার ফাঁকফোকর খুঁজে বের করা কঠিন হবে।

জি৭-ভুক্ত দেশগুলো সামগ্রিকভাবে বৃহৎ পরিসরে নিষেধাজ্ঞা দিতে নারাজ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের আশা, সামরিক খাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতের ক্ষেত্রে জি৭-ভুক্ত সদস্য দেশগুলো অন্তত এটা ধরে নেবে যে, মনোনীত তালিকায় না থাকা পর্যন্ত এসব সরঞ্জাম রপ্তানি নিষিদ্ধ। তবে ঠিক কোন কোন খাতে নতুন এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে, তা নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। জি৭-এর সদস্য দেশগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্য।

ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়ার ওপর আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথ খুঁজছে, মূলত সেই তাড়া থেকেই জি৭-এর এই উদ্যোগ। এখন যেসব বিধিনিষেধ রয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো রাশিয়ার রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে ভিসা সীমিত করা। এর বাইরে রয়েছে রাশিয়ার জ্বালানি তেলের দাম বেঁধে দেয়া। তবে এসব পদক্ষেপে তেমন একটা কাজ হচ্ছে না। সে কারণেই নতুন করে এই তোড়জোড়। এদিকে পশ্চিমাদের নানা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার তেল বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি ইনস্টিটিউটের (আইইএ) তথ্য অনুসারে, রাশিয়ার মাসিক তেল বিক্রির পরিমাণ ইউক্রেন যুদ্ধের আগের পর্যায়ে ফিরে গেছে। গত মার্চে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল ও তেলজাত পণ্য বিক্রির পরিমাণ গত বছরের এপ্রিলের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। মার্চে রাশিয়ার দৈনিক তেল ও তেলজাতীয় পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ৬ লাখ ব্যারেল বেড়েছে। এতে গত মাসে তেল ও তেলজাত পণ্য বিক্রি করে রাশিয়ার আয় হয়েছে প্রায় ১২ দশমিক ৭ বিলিয়ন বা এক হাজার ২৭০ কোটি ডলার। তবে তেল বিক্রি বাবদ রাশিয়ার আয় গত বছরের তুলনায় ৪৩ শতাংশ কমেছে। এর কারণ, ইউরোপীয়রা রাশিয়ার তেল কেনা কমিয়ে দেয়ায় দেশটির তেল ক্রেতার সংখ্যা এখন অনেক সীমিত। পশ্চিমা বিধিনিষেধের কারণে ক্রেতারা অনেক দর-কষাকষির সুযোগ পাচ্ছে, ছাড় আদায় করতে পারছে। জি৭ দেশগুলো রাশিয়ার তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলারে বেঁধে দিয়েছে।

ইউক্রেনের পক্ষে সবচেয়ে সরব অবস্থানে থাকা দেশগুলো জি৭-ভুক্ত। নেতাদের দাবি, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়বে। দেশটির ক্ষতি বাড়ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত