মহামারি করোনাভাইরাসের ধাক্কায় দেশে দরিদ্রের সংখ্যা বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে। তবে এর মধ্যে শহরের অধিবাসীদের মধ্যে দারিদ্র্যের হার বৃদ্ধির বিষয়টি নতুন করে উদ্বেগের কারণ বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, করোনার কারণে শহরের সমাজে দরিদ্র্যের সংখ্যা বাড়ছে এবং গত বছর মোট দরিদ্রের ৫১ শতাংশই ছিল নতুন দরিদ্র।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে আসে। এদিন রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে বিআইডিএস রিসার্চ অ্যালমানাক ২০২৩ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে এই গবেষণার তথ্য প্রকাশ করা হয়। বিআইডিএসের দুই দিনের সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। আরো উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম ও পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিৎ কর্মকার। গবেষণা ফলাফল তুলে ধরে সংস্থাটির মহাপরিচালক বিনায়ক সেন বলেন, ‘মোট দরিদ্রের প্রায় ৫০ শতাংশ নতুন দরিদ্র। যারা নিম্নমধ্যবিত্ত থেকে নেমে গেছে। সংকটে থাকা এই শ্রেণির ওপর আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।’
তিনি জানান, ২ হাজার ৪৬টি খানার ওপর জরিপ করে বিআইডিএস এই গবেষণা করেছে। এতে উল্লেখ করা হয়, করোনার আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালে দরিদ্র মানুষের মধ্যে আত্মকর্মসংস্থানের হার ছিল ৩৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। করোনার পর অর্থাৎ গত বছর সেটি বেড়ে ৩৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ হয়েছে। অন্যদিকে অতিদরিদ্র মানুষের মধ্যে করোনার আগে আত্মকর্মসংস্থানের হার ছিল ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। করোনার পর সেটি বেড়ে ৩৩ দশমিক ২১ শতাংশে দাঁড়ায়। এছাড়া ২০১৯ সালে দরিদ্র খানা বা পরিবারের মধ্যে ৩৯ দশমিক ২৯ শতাংশ এমএফএস ব্যবহার করত। করোনার পর অর্থাৎ ২০২২ সালে সেটি বেড়ে ৭৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ হয়েছে। যদিও তাদের ব্যাংক হিসাব খোলার পরিমাণ খুব একটা বাড়েনি। করোনার আগে ৩২ দশমিক ২২ শতাংশ পরিবারের ব্যাংক হিসাব ছিল। পরে সেটি বেড়ে হয়েছে ৩৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ। অতিদরিদ্র পরিবারের মধ্যে এমএফএস ব্যবহারের প্রবণতাও বেড়েছে জানিয়ে বলা হয়, ২০১৯ সালে এসব পরিবারের মধ্যে ১৫ দশমিক ১৫ শতাংশ এমএফএস ব্যবহার করত। করোনার পর সেটি বেড়ে ৬৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ হয়েছে। এই ধরনের অতি দরিদ্র পরিবারের মধ্যে ব্যাংক হিসাব খোলার প্রবণতা বাড়েনি।