অর্থনীতির বড় মাথাব্যথা খেলাপি ঋণ

বললেন গভর্নর

প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বর্তমান অর্থনীতির সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ বলে মন্তব্য করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। গতকাল বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) আয়োজিত ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন গভর্নর। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। তার মধ্যে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস এবং বাংলা কিউ আর অন্যতম। এর সঙ্গে এবিবির উদ্যোগে নতুন করে যুক্ত হলো ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন। আমরা আশা করি ২০২৭ সালের মধ্যে মোট লেনদেনের ৭৫ শতাংশ ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। তবে ব্যাংকের খেলাপি ঋণকে বর্তমান অর্থনীতির সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ বলে মনে করেন গভর্নর। পাশাপাশি কর্পোরেট সুশাসন বাড়ানোর বিকল্প নেই বলেও জানান তিনি। গভর্নর বলেন, শিগগিরই আমরা দেশে ডিজিটাল ব্যাংক চালু করব। আমরা শিগগিরই একটি অনলাইন রিয়েল-টাইম ক্রেডিট রেটিং সিস্টেম চালু করার পরিকল্পনা করছি। আমরা জাতীয় ঋণ কার্ড ইস্যু করার খুব কাছাকাছি। এতে প্রতি বছর দেশ থেকে মোটা অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে যাচ্ছে তারা লভ্যাংশ হিসেবে। বাংলাদেশের নিজস্ব ডেবিট কার্ড চালু হলে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা কমে যাবে। বর্তমানে অধিকাংশ ব্যাংকই কোর ব্যাংকিং সল্যুশন সফটওয়্যার ব্যবহার করছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব দ্বারপ্রান্তে চলে আসায় ব্যাংকিং খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বাড়বে, বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর।

আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো সুশাসন এবং খেলাপি ঋণ। ব্যাংকিং নীতিমালা বাস্তবায়ন ও ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের শক্তিশালী ভূমিকা খেলাপি ঋণ সমস্যার একমাত্র সমাধান হতে পারে। এই সমস্যা সমাধানে আমাদের সাংস্কৃতিক পরিবর্তন আনতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষার মাধ্যমে ব্যাংক ব্যবস্থায় নৈতিকতা ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। যাতে ব্যাংক খাতের যেকোনো ধরনের সমস্যার সমাধান করা যায়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, আমরা সফলভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়ন করেছি। এখন আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প অর্জনের জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য ২০২৭ সালের মধ্যে ৭৫ শতাংশ ক্যাশলেস লেনদেন সম্পন্ন করা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে এবিবি’র চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, একটি সম্মিলিত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে বাংলাদেশের ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রি একটি টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ইকোসিস্টেম তৈরি করতে পারে, যা সমস্ত স্টেকহোল্ডারদের জন্য উপকারী হবে। এবিবি’র ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন সামিট বাংলাদেশে ডিজিটাল আর্থিক সেবার প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার প্রধান গতিধারাগুলো সম্পর্কে মূল্যবান পর্যবেক্ষণ দেবে। এটি দ্রুত ডিজিটাল রূপান্তরের মধ্যে পথচলার জন্য ব্যাংকগুলো যে কৌশল নিতে পারে তা বিশ্লেষণ করবে এবং আর্থিকসেবা খাতকে প্রভাবিত করে এমন বিদ্যমান নীতি এবং নিয়ন্ত্রক কাঠামোগুলো নিয়ে গবেষণা করবে। এছাড়া এ খাতের স্টেকহোল্ডার, ইকোসিস্টেম এনাবেলার্স ও নীতি নির্ধারকদের এগিয়ে যাওয়ার পথ সুপারিশ করবে।

দুই দিনব্যাপী ব্যাংকিং অন ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন সম্মেলনের প্রথম দিনে উদ্বোধনের পর তিনটি ভিন্ন সেশনে ট্রান্সফরমেশন বিষয়ক তিনটি কি-নোট উপস্থাপন করা হয়। এসব সেশনে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারের ফলে ব্যাংকিং ব্যবসায় বৈচিত্র্যকরণ, সমস্যা, সম্ভাবনা নিয়ে প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।