ঢাকা ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মশলার বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামছে ভোক্তা অধিকার

মশলার বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামছে ভোক্তা অধিকার

আসন্ন কোরবানি ঈদ সামনে রেখে মশলার বাজার নিয়ন্ত্রণে মৌলভীবাজার ও শ্যামবাজারে কাজ করবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গতকাল রোববার দুপুরে কারওয়ান বাজারে গরম মশলার মূল্য ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুল জব্বার মণ্ডল মশলার বাজারে অনিয়মের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মৌলভীবাজারের মশলা ব্যবসায়ীরা মূল্য তালিকা ঝোলান না। কোথা থেকে কত দামে এনেছেন তাও জানাতে চান না। ইচ্ছামতো দাম নির্ধারণ করেন। এখানে আমাদের কাজ করার জায়গা আছে। মশলার দোকানে টেক্সটাইল কালার ব্যবহার করতেও দেখছি। ফুডগ্রেড কালার নয়। আদার দাম প্রসঙ্গে সফিকুজ্জামান বলেন, চট্টগ্রামে আমরা বাজার মনিটর করেছি। ঢাকার বাজারও পর্যবেক্ষণ করছি।

আদার দাম প্রসঙ্গে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, চট্টগ্রামে আমরা বাজার মনিটর করেছি। ঢাকার বাজারও পর্যবেক্ষণ করছি। সফিকুজ্জামান বলেন, গরম মশলা এবং আদার ক্ষেত্রে বাজারে একটা অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে। দাম বেড়ে যাচ্ছে। কোরবানিকে টার্গেট করে এটা করা হচ্ছে বলে আমাদের ধারণা। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টও তাই বলছে।

তিনি বলেন, আগামীকাল থেকে সারা দেশে মশলার বাজার, বিশেষ করে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাই এবং ঢাকার মৌলভীবাজার, শ্যামবাজারের মশলার বাজার নজরদারিতে রাখছি। এখানে আন্ডার ইনভয়েসিং হলে এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করব। এক সপ্তাহ আমি এটা অবজার্ভ করবো। তারপর ডিটেইলস রিপোর্ট সরকারের কাছে দেবো। ক্যাব থেকে বলা হয়েছে, সব আদা চাইনিজ আদা নামে বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রামে আমাদের ভালো মানের আদা হয়, সেটা হার্ভেস্টিং এর আগেই কাঁচা বিক্রি করে অতি মুনাফা করবে, এটা দুই ধরনের প্রতারণা।

অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুর শাহরিয়ার বলেন, সারা বছর মশলার বাজার স্থিতিশীল ছিল, এখন যখন ঈদ ঘনিয়ে আসল, ব্যবসায়ীরা মোচড় দিয়ে উঠেছে। ঈদের আগে কেউ কেউ বাজারে কারসাজি করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত আছে।

তিনি বলেন, সোমবার থেকে আমাদের সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থান নিতে হবে। কোরবানি ঈদের ১৫ দিন আগেই যেন বাজার স্থিতিশীল থাকে। আগামীকাল থেকে আমাদের সর্বোচ্চ কঠোরতা অবলম্বন করা হবে। যে প্রতিষ্ঠানে মূল্যতালিকা না টানানো হবে, একদিনের জন্য হলেও সেই প্রতিষ্ঠান বন্ধ করবো। সেই প্রতিষ্ঠানকে শেখানোর দরকার আছে। যদি কেউ কাগজ না রাখে, সেই প্রতিষ্ঠানকে তিনদিনের জন্য বন্ধ করে যাবো। যখন ধরা হয় তখন অনেক ব্যবসায়ী মিলে হইচই করবে, এই দিন আর নাই। ‘আদাসহ অন্যান্য মশলার বাজার নিয়ন্ত্রণে ঢাকায় আমাদের সবগুলো টিমকে নিয়োগ করবো। এটা স্থিতিশীল করতে সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে যাবো। চায়না আদা এখন নাই। চায়না আদার নাম করে অন্য আদা বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে, এটাও দেখা হবে। আমাদের এবার কঠোরতা থাকবে একটু ভিন্ন রকম।’

অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুল জব্বার বলেন, পাইকারিতে ১২৯ টাকা থেকে ২৫০ টাকা দরে আদা বিক্রি করা হচ্ছে। পাইকারির ১২৯ টাকার আদা খুচরা বাজারে গিয়ে ১০০ টাকারও বেশি লাভ করা হচ্ছে। ২৫০-২৮০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীরা নিজেদের কমিশন এজেন্ট দাবি করেন। তারা বলেন, এই পণ্যগুলো আমাদের নয়। কমিশনের বিনিময়ে পণ্য বিক্রি করি। কিন্তু উৎপাদকের কোনো ক্যাশমেমো তারা দিতে পারেন না। মৌখিকভাবে এই মূল্য নির্ধারণ করে থাকে। আদার নাম নিয়ে ঢাকা নিউ মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের বলেন, খুচরা ও পাইকারির মধ্যে এত পার্থক্য হতে পারে না। আপনারা শুধু মার্কেটগুলো মনিটরিং করেন। মহল্লার মধ্যেও এটা হতে পারে। আমি নিজেও ৩০০ টাকা করে কিনেছি রোববার। মূল বিষয়টা খতিয়ে দেখা দরকার। আপনারা অভিযানে না গিয়ে, ব্যক্তিগতভাবে বাজারে যান। তাহলে মূল চিত্রটা দেখতে পারবেন। পাড়া মহল্লায় বিভিন্ন দোকান হয়ে গেছে। তারা অনেকভাবেই বিক্রি করেন। আদা ৫০০ টাকা বলছে, এটি আমি কখনো শুনিনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত