বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বরাদ্দ সুরক্ষিত রাখার জন্য সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে শিশুরা। তারা বলেছে, বর্তমান সরকার সফলতার সঙ্গে অপুষ্টি কমিয়ে এবং টিকাদানের মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে শিশুদের সুরক্ষিত করে লাখ লাখ শিশুর মৃত্যু ঠেকিয়েছে। তবে এই অগ্রগতি বজায় রাখার জন্য সরকারের আরো বেশি বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে এক ব্রিফিংয়ে এ আহ্বান জানানো হয়। এদিন ইউনিসেফ ও শিশু অধিকারবিষয়ক সংসদীয় ককাসের (পার্লামেন্টারি ককাস অন চাইল্ড রাইটস) যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২৩-২০২৪ এবং শিশু অধিকার’ শীর্ষক এ ব্রিফিংয়ে সারাদেশ থেকে আসা শিশু, ককাস, অর্থ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বরাদ্দ সুরক্ষিত রাখতে সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফ ও শিশুরা। খুলনা থেকে আসা ১৪ বছর বয়সি শিশু সাংবাদিক মাইশা আঞ্জুম আরিফা বলেন, ‘আমি অনেক শিশুর সঙ্গে কথা বলেছি যাদের দিনে তিনবেলা খাবারের জন্য কাজ করতে হয়। তাদের বেশিরভাগই আবার স্কুলে যায় না এবং অনেককে অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও দিনের পর দিন কাজ করতে হচ্ছে।’ গত কয়েক দশক ধরে শিশুদের জন্য সরকারি অর্থায়নের কল্যাণে বাংলাদেশ সফলতার সঙ্গে অপুষ্টি কমিয়ে এবং টিকাদানের মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে শিশুদের সুরক্ষিত করে লাখ লাখ শিশুর মৃত্যু ঠেকিয়েছে। তবে, এ অগ্রগতি বজায় রাখার জন্য সরকারের আরো লক্ষ্য কেন্দ্রিক বিনিয়োগ প্রয়োজন। জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার এবং শিশু অধিকারবিষয়ক সংসদীয় ককাসের চেয়ার শামসুল হক টুকু বলেন, ‘আজ শিশুদের কথা শুনে এটা পরিষ্কার জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাদের জন্য আমাদের আরো অনেক কিছু করার আছে। আমি তাদের অধিকার সমুন্নত রাখতে এবং তাদের মতামত তুলে ধরতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। একই কাজ করার জন্য আমি আমার সহকর্মীদের প্রতিও আহ্বান জানাই।’ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় আনুপাতিকভাবে কমেছে। ‘শিশুদের অধিকার পূরণে এবং তাদের সার্বিক কল্যাণে-উন্নয়নে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় অগ্রগতি করেছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক খাতে বিনিয়োগ বজায় না থাকলে এ অগ্রগতি পিছিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, ’ বলেন বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি মি. শেলডন ইয়েট। প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির সেবাগ্রহিতার সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে ইউনিসেফ। পাশাপাশি সুবিধার প্রকৃত মূল্যের উল্লেখযোগ্য পতনরোধে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধানের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শিশুদের স্বার্থে অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য সরকার ও শিশু অধিকারবিষয়ক সংসদীয় ককাসের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেলডন ইয়েট তার বক্তব্য শেষ করেন। তিনি বলেন, সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। বাজেটে শিশুদের অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য ইউনিসেফ সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।