দেশের পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে এ সপ্তাহের পঞ্চম ও শেষ কর্মদিবস গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ জুন) লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল। এদিন জীবন বিমা কোম্পানির শেয়ারের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রকৌশল এবং ওষুধ খাতের শেয়ারের দামও বেড়েছে। তাতে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট। আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বেড়েছে ৬২ পয়েন্ট। এর ফলে মঙ্গলবার দরপতনের পর বুধ ও বৃহস্পতিবার টানা দুদিন উত্থান হলো। সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ও শেয়ার কেনার চাপ বেশি ছিল বিমা খাতের শেয়ারে। এতে খাতটির শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। ফলে গত কয়েক কার্যদিবসে শেয়ারদর পতনের পর আবার বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে এ খাতটি। অপরদিকে এদিন বিনিয়োগকারীরা বিমুখ ছিলেন পাট খাতের শেয়ারে। এতে আলোচ্য খাতটিতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বুধর্বাও বিমা খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ৫৭টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ৫৩টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে এবং বাকিগুলোর দর অপরিবর্তিত ছিল। দ্বিতীয় স্থানে ছিল সিমেন্ট খাতের শেয়ার। খাতটিতে দর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ। শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে তৃতীয় স্থানে ছিল আইটি খাত। এছাড়া টেলিকমিউনিকেশন, ব্যাংক, বিবিধ, ওষুধ ও রসায়ন, প্রকৌশলী, মিউচুয়াল ফান্ড, বস্ত্র এবং আর্থিক খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধির বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপ থাকায় পাট খাতের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটিতে শেয়ারদর কমেছে শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ। পরের স্থানে থাকা ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে শেয়ারদর কমেছে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ। অন্যদিকে গত বুধবার লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিমা খাতে। এ খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩৩ দশমিক ৭০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ৭ দশমিক ৯০ শতাংশ লেনদেন হওয়া আইটি খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইতে ৭৮২ কোটি ৮০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৮৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪৭টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১২৩টি এবং কমেছে ৪৬টির। শেয়ারদর পরিবর্তন হয়নি ১৭৮টির।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২২ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৩৮ দশমিক ৯৮ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক দশমিক ৪৭ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ৩ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ১৮৯ দশমিক ২১ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৭৫ দশমিক ৩৩ পয়েন্টে। এদিন চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ১৪ কোটি ৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২১০টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৭৪টি এবং কমেছে ৪৬টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ৯০টির। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৩৫ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৭০৩ দশমিক ২৪ পয়েন্টে। সিএসই-৫০ সূচক ২ দশমিক ১৬ পয়েন্ট এবং সিএসসিএক্স ২ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩১৮ দশমিক ৬১ পয়েন্টে এবং ১১ হাজার ১৯৫ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে। সিএসই-৩০ সূচক ২ দশমিক ৫০ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ১৮ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ১ দশমিক ৭২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৩ হাজার ৩৭৭ দশমিক ৮৫ পয়েন্টে, ১১ হাজার ১৮৭ দশমিক ৭৯ পয়েন্টে ও ১ হাজার ১৭৪ দশমিক ৩৪ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক দশমিক ৩০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩১২ দশমিক ৬১ পয়েন্টে।