জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে কিছুটা নেতিবাচক প্রবণতায় দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। ফলে আলোচিত সপ্তাহে লেনদেন, সূচক ও দাম কমার বিপরীতে অধিকাংশ শেয়ারের দাম কমেছে। তাতে নতুন করে বিনিয়োগকারীরা প্রায় ৬০০ কোটি টাকার মূলধন অর্থাৎ পুঁজি হারিয়েছে। বিদায়ি এ সপ্তাহে দেশের পুঁজিবাজারে মোট পাঁচ কর্মদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে তিন কর্মদিবস উত্থান আর দুই কর্মদিবস সূচক পতনের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে। কিন্তু গত মঙ্গলবার বড় দরপতন হয়। এই দরপতনকে কেন্দ্র করেই দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন (পুঁজি) কমেছে ৫৯৩ কোটি টাকা। সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণে এ চিত্র দেখা গেছে। রোববার (৪ জুন) সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে লেনদেনের শুরুতে ডিএসইর মূলধন ছিল ৭ লাখ ৭৪ হাজার ২৮১ কোটি ২৬ লাখ ৪৪ হাজার ৪৮০ টাকা। আর শেষ দিন বৃহস্পতিবার (৮ জুন) লেনদেন শেষে মূলধন দাঁড়ায় ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৬৮৮ কোটি ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ৮৯০ টাকা। অর্থাৎ, টাকার অঙ্কে পুঁজি কমেছে ৫৯২ কোটি ৯৮ লাখ ৪ হাজার ৫৯০ টাকা। তবে তার আগের টানা চার সপ্তাহ মূলধন বা পুঁজি বেড়েছিল। বিদায়ি সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৬৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ১১৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২০৮টির। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছিল ১০৮টির, কমেছিল ৮১টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২০৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ২ দশমিক ৭১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস সূচক ১ দশমিক ১৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৭৮ পয়েন্টে ও ডিএস-৩০ সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৮ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৯২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ সপ্তাহে ফ্লোর প্রাইসের কারণে শেয়ার লেনদেন হয়নি দেড় শতাধিক কোম্পানির। তারপরও বিদায়ি সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ৪৪৪ কোটি ৫৬ লাখ ১৯ হাজার ৭৮৪ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৫ হাজার ৫২১ কোটি ৬৪ লাখ ১০ হাজার ৫৮০ টাকা। অর্থাৎ, ৭৭ কোটি ৭ লাখ ৯০ হাজার ৭৯৬ টাকার শেয়ার লেনদেন কমেছে, শতাংশের হিসাবে যা ১ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। এরপর যথাক্রমে লেনদেন হয়েছে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, রূপালী লাইফ ইনস্যুরেন্স, রংপুর ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস, নাভানা ফার্মাসিটিউক্যালস, লাফার্জহোলসিম, জেমিনি সি ফুড, অগ্নি সিস্টেমস, রয়েল টিউলিপ সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পার এবং আমরা নেটওয়ার্কস শেয়ার। দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) কিছুটা ইতিবাচক প্রবণতায় লেনদেন হয়েছে। বিদায়ি সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১৮ হাজার ৭৬২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।