খেলাধুলায় বিপুল বিনিয়োগ সৌদি আরবের

প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক

গত বছর কাতারে হয়ে গেল বিশ্বকাপ ফুটবল। ২০৩০ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চায় সৌদি আরব। সে জন্য তারা দেশটির শীর্ষ চারটি ক্লাবের মালিকানা রাষ্ট্রীয় সার্বভৌম তহবিলের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো খেলাধুলায় বিপুল বিনিয়োগ করছে। সৌদি আরব সম্প্রতি নিজেদের গলফ টুর্নামেন্ট এলআইভি’র সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর আমেরিকার গলফ টুর্নামেন্ট পিজিএ ট্যুর একীভূত করার লক্ষ্যে চুক্তি করেছে। এটা তাদের জন্য বড় সফলতা। পর্তুগালের ফুটবল তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো সৌদি আরবের লিগে খেলছেন। এরপর তারা আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসিকে নিজেদের লিগে খেলাতে উঠেপড়ে লাগে। কিন্তু মেসি শেষ পর্যন্ত সাবেক ফুটবল তারকা ডেভিড বেকহ্যামের মালিকানাধীন দল যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেন। নিউইয়র্ক টাইমসের এক সংবাদে বলা হয়েছে, এই ঘটনায় বোঝা যায় অর্থ থাকলেই সবকিছু কেনা যায় না। সেই সঙ্গে মেসির মায়ামিতে যোগ দেয়ার ঘটনায় বোঝা গেল, সৌদি ধনীদের তুরুপ করতে কী লাগে। মেসির সঙ্গে মায়ামির চুক্তিতে কী আছে, তা এখনো প্রকাশিত হয়নি। কিন্তু নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্যানুসারে, মেজর লিগ সকার বা এমএলএসের যে বেতন কাঠামো আছে, মেসির ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে না। সেই সঙ্গে আরও জানা গেছে এবং বিষয়টি খুবই অপ্রচলিত- তা হলো, খেলোয়াড়ি জীবন শেষে মেসি মায়ামির ওই ক্লাবের মালিকানার অংশীদারি পাবেন। খেলোয়াড়দের ট্রান্সফার ফি জোগানোর ক্ষেত্রে ক্রীড়াসামগ্রী প্রস্তুতকারীদের বড় ভূমিকা আগেও দেখা গেছে, কিন্তু মেসির ক্ষেত্রে আইফোনের মালিক কোম্পানি অ্যাপলের ভূমিকা কিছুটা অস্বাভাবিকই বটে। মেসির মায়ামিতে আসার কারণে অ্যাপল টিভি ও স্ট্রিমিং সেবার গ্রাহকসংখ্যা এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যেতে পারে, কারণ, আগামী ১০ বছর এমএলএসের খেলা দেখানোর স্বত্ব ২৫০ কোটি ডলারে কিনেছে অ্যাপল। নতুন সাবস্ক্রাইবারদের ম্যাচ দেখিয়ে যে আয় হবে, সেখান থেকে একটি অংশ মেসিকে দেয়ার ব্যাপারে আলোচনা করেছে অ্যাপল ও এমএলএস। সেই সঙ্গে গত বুধবার অ্যাপল আরো জানিয়েছে, তারা লিওনেল মেসির জীবনীর ওপর কয়েক পর্বের তথ্যচিত্র তৈরি করবে। খেলাধুলায় সৌদি আরবের বিনিয়োগ বৃদ্ধির পেছনে ভূরাজনৈতিক উচ্চাভিলাষও রয়েছে। সে কারণে মেসিকে লিগে খেলাতে তারা ৫০ কোটি ডলার সেধেছিল। তবে মেসি এখন সৌদি আরবের পর্যটন দূত হিসেবে কাজ করছেন, কিছুদিন আগে সপরিবার মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই দেশে ঘুরেও গেছেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেখানকার কোনো ক্লাবে যোগ দেয়ার বিপক্ষেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তবে পিজিএ ট্যুরের সঙ্গে সৌদি আরবের এলআইভি’র একীভূতকরণের বিষয়টি এখনো কণ্টকমুক্ত নয়। এ নিয়ে মামলা মোকদ্দমা হতে পারে। তবে মামলা চালানোর মতো অনেক অর্থ সৌদি আরবের আছে। গলফ খেলার বিনিয়োগকারী হেনরি ক্রেভিস এই একীভূতকরণের দাবিতে সমর্থন দিলেও মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা এই চুক্তির বিষয়ে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।