কোরবানির ঈদকে ঘিরে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি বেড়েছে। এতে দেশের বাজারের চাহিদার তুলনায় পণ্যটির সরবরাহ বেড়েছে। এতে করে মাত্র একদিনের ব্যবধানে পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৮ টাকা করে কমেছে। খুচরা পর্যায়ে কেজিতে ১০ টাকা করে কমেছে পেঁয়াজের দাম। দাম কমায় খুশি পাইকারসহ নিম্ন আয়ের মানুষজন। হিলি স্থলবন্দরেও আমদানির অনুমতি দেয়ায় বন্দর দিয়ে ইন্দোর ও নাসিক জাতের পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে গত বুধবার (১৪ জুন) রাতে হিলি স্থলবন্দরে টাকা কম বেশি দেয়াকে কেন্দ্র করে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন ভারত থেকে পণ্য নিয়ে আসা ট্রাক চালকদের বাঙালি এবং ইউপি রাজ্যের দুইটি গ্রুপ। এতে ভারতীয় পেঁয়াজ বহনকারী একটি ট্রাক চালকের মাথা ফেটে যায় এবং হেলপারের একটি হাত ভেঙে যাওয়ায় বন্দর কর্তৃপক্ষ রাতেই তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বন্দরের ভেতরে ব্যারিকেড দেন ভারতীয় ট্রাকের চালকরা। ফলে সকাল থেকেই ভারত থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল। আহত ট্রাক চালকদের পক্ষ দাবি করেন, হামলাকারীদের বাংলাদেশ পুলিশের কাছে হস্তান্তরের পাশাপাশি আহতদের চিকিৎসার সব খরচ বহনের। আহত ভারতীয় ট্রাক চালক খুরশিদ আহম্মেদ বলেন, কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের দেশের চালকরা আমাদের ওপর হামলা করেন। বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফিরে গেলে তারা আমাদের ওপর আবারও হামলা করতে পারেন। আমরা তাদের বিচার ও ক্ষতিপূরণ চাই। ভারতীয় আরেক চালক আনিস মোহাম্মদ বলেন, হামলাকারীদের বাংলাদেশের পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হোক। আমরা তাদের শাস্তি চাই। এদিকে বন্দর ৬ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর দুই দেশের ব্যবসায়ী, পুলিশ এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সমন্বিত আলোচনা সভার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান হয়। পরে দুপুর দেড়টা থেকে আবারও পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়। এ বিষয়ে হিলি পানামা পোর্ট লিংকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রতাব মল্লিক বলেন, ভারতীয় চালকের দুই গ্রুপ নিজেদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এতে একজনের মাথা ফেটে যায় এবং আরেকজনের একটি হাত ভেঙে গেছে। রাতেই আমরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। সকাল থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকলেও দুপুরে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। এখন পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক রয়েছে। দুপুরে উভয় দেশের ব্যবসায়ী ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা উল্লেখ করে আমদানিকারক জামিল হোসেন চলন্ত বলেন, যে সমস্যা ছিল, তা সমাধান হয়েছে। পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় আমরা কাঁচামাল নিয়ে বিপাকে পড়েছিলাম। পূর্বের তুলনায় পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ বাড়ায় দাম কমতির দিকে রয়েছে। বর্তমানে বন্দরে ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ পাইকারিতে (ট্রাকসেল) ২৮ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কিছু নিম্ন মানের পেঁয়াজ ২৬ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হয়েছে। এসব পেঁয়াজ একদিন আগেও ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। এছাড়া নাসিক জাতের পেঁয়াজ ৩৭ থেকে ৩৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।