চিনির বাজারের অস্থিরতা চলছে কয়েক মাস ধরে। সরকারি নানা হুঁশিয়ারি আর অভিযানেও সুফল মিলছে না। কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না চিনির বাজার। দেশে পর্যাপ্ত চিনি আমদানি হলেও সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন মিল মালিকরা। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং রেট কমলেও দেশের বাজারে চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে আসছে না। দেশের বাজারে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি চিনি এখন ১২৩ টাকা ৫০ পয়সা দামে বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে চিনির দাম ১৩২ টাকার কাছাকাছি। আর মিল থেকে চিনির জোগান কমে যাওয়ায় আসন্ন কোরবানির ঈদে চিনির দাম আরো বাড়ার শঙ্কায় পাইকারি ব্যবসায়ীরা। এদিকে বৃহত্তর চট্টগ্রামের চিনির ব্যবসা পুরোপুরি খাতুনগঞ্জ কেন্দ্রীক হলেও; এখানে তেমন কোনো দেখা নেই চিনির। এখানে চিনি হাতবদল হয় ডেলিভারি কিংবা ডিওর মাধ্যমে। আর এতেই জটিলতা সৃষ্টি হয় দাম নির্ধারণে। ব্যবসায়ীরা বলেন, পর্যাপ্ত চিনি আমদানি সত্ত্বেও একমাত্র ডিও জটিলতার কারণে দাম কমছে না। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স আলতাফ অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক মো. আফতাফ এ গাফ্ফার বলেন, ডলার ও এলসি সংকট এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে দাম বাড়াচ্ছে মিলাররা। তবে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে অপরিশোধিত চিনি আমদানি কমে গেলেও বেড়েছে পরিশোধিত চিনি আমদানির পরিমাণ। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১০ জুন পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজার ৩৬০ মেট্রিক টন পরিশোধিত চিনি আমদানি করেছেন মিল মালিকরা। যা গত বছরের এ সময়ের তুলনায় ২৭২ শতাংশ বেশি। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপকমিশনার ব্যারিস্টার মো. বদরুজ্জামান মুন্সি বলেন, দেশে গত বছরের এই সময়ের তুলনায় ২০২৩ সালের ১০ জুন পর্যন্ত পরিশোধিত চিনির আমদানি বেড়েছে ৩ গুণ। এদিকে চাহিদা কমে যাওয়ায় বিশ্ববাজারে চিনির বুকিং রেট কমেছে। গত মাসে প্রতি মণ চিনির বুকিং রেট ৬৮০ মার্কিন ডলার ছিল। যা এখন নেমে এসেছে ৬৫০ ডলারে। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স আরএম এন্টারপ্রাইজের মালিক মাহমুদুল হক লিটন বলেন, মিষ্টির দোকানসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে চিনির চাহিদা কমেছে। পাশাপাশি বাজারে পর্যাপ্ত জোগান ও সরবরাহ রয়েছে। দেশে বছরে ১৮ থেকে ২০ লাখ মেট্রিক টন চিনির চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা থেকে আমদানি করা চিনি চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে খালাস হয়। এর বাইরে ভারত থেকে আমদানি করা চিনি আসে স্থলবন্দরগুলো দিয়ে।