ঈদের আগে রেমিট্যান্সের পালে হাওয়া
প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে বাড়ছে রেমিট্যান্সপ্রবাহ। চলতি মাসের প্রথম ১৬ দিনে ১১২ কোটি ৫৯ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এ হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৭ কোটি ৪ লাখ ডলার। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে এ কথা জানা গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুন মাসের প্রথম ১৬ দিনে ১১২ কোটি ৫৯ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। আর গত মে মাসের প্রথম ১৯ দিনে ১১২ কোটি ৯২ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। সে হিসাবে এখন পর্যন্ত চলতি মাসের রেমিট্যান্সপ্রবাহ ভালো অবস্থানে রয়েছে। মূলত ঈদ উপলক্ষ্যে প্রবাসীরা পরিবারের কাছে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাসশেষে রেমিট্যান্স ২০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যানুযায়ী, জুন মাসের প্রথম ১৬ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২০ কোটি ৭২ লাখ ১০ হাজার ডলার। আর বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৫ কোটি ৯২ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৮৫ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩২ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরো জানায়, চলতি মাসের ১০ থেকে ১৬ জুন প্রবাসীরা ৫৫ কোটি ২ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। এছাড়া জুন মাসের প্রথম দুই দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৭ কোটি ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার। আর ৩ থেকে ৯ জুন পর্যন্ত দেশে ৫০ কোটি ৫৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর আগে চলতি বছরের মে মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ১৬৯ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। এ সময় দেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ঢাকা বিভাগের প্রবাসীরা। আর সবচেয়ে কম রেমিট্যান্স এসেছে রংপুর বিভাগে। এদিকে গত এপ্রিলে দেশে এসেছিল ১৬৮ কোটি ৩৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। মার্চে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ, আর জানুয়ারিতে এসেছিল প্রায় ১৯৫ কোটি ৮৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত বছরের জুলাইয়ে দেশে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। এর পরের মাসে কিছুটা কমে আসে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। এর পরের মাস সেপ্টেম্বরে এসে মাসের ব্যবধানে ৫০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স কম আসে। ওই মাসে মোট প্রবাসী আয়ের হিসাব দাঁড়ায় ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। অক্টোবরে আরেক দফা কমে রেমিট্যান্স আসে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। পরে নভেম্বরে এসে আবার ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে বৈধ চ্যানেলে পাঠানো প্রবাসীদের আয়ের অঙ্ক। ওই মাসে মোট রেমিট্যান্স আসে ১৫৯ কোটি ৫২ লাখ ডলার। আর বিদায়ী বছরের শেষ মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। ব্যাংক সূত্র জানায়, বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠালে নগদ প্রণোদনা পাওয়া যায়। জুন মাসে ঈদুল আজহা। ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা দেশে পরিবার পরিজনের কাছে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে। ফলে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়ছে। রেমিট্যান্সের এই ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রেমিট্যান্স বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত বছর ১৬ নভেম্বর বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে প্রবাসীদের উদ্দেশে জানায়, বৈধ পথে বা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণ করুন, প্রিয়জনকে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ রাখুন- হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর জন্য এভাবে আহ্বান জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।