গত সোমবার শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পরই গতকাল মঙ্গলবার দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের পতনের পাশাপাশি কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম। তবে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবস দরপতন হয়। একই সঙ্গে কমে যায় লেনদেনের গতি। এ পরিস্থিতিতে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের মিশ্র প্রবণতা দেখা যায়। তবে সোমবার সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়। একই সঙ্গে ৪০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে যাওয়া লেনদেন বেড়ে ৫০০ কোটি টাকার ঘরে চলে আসে। শেয়ারবাজারে এ উত্থানে প্রধান ভূমিকা রাখে বিমা কোম্পানি। গত সোমবার তালিকাভুক্ত প্রায় সবকটি বিমা কোম্পানির দাম বাড়ে। এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। একই সঙ্গে অন্যান্য খাতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাজার পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা একের পর এক প্রতিষ্ঠান দরপতনের তালিকায় চলে আসে। এ ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেয় আগের দিন দাম বাড়ার তালিকায় নেতৃত্ব দেওয়া বিমা খাত। প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই ঢালাওভাবে একের পর এক বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম কমতে থাকে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে এ ধারা। বিমা কোম্পানিগুলোর দরপতনের প্রভাব অন্য খাতের ওপরও পড়ে। ফলে একদিকে বড় হয় দরপতনের তালিকা, অন্যদিকে সবকটি মূল্যসূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে বিমা খাতের ৪৫টি কোম্পানির শেয়ার দাম কমার বিপরীতে মাত্র ৫টির শেয়ার দাম বেড়েছে। আর সব খাত মিলে ৫৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিপরীতে ১১৫টির দাম কমেছে। আর ১৭৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১২ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩০১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৬৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৮৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সবকটি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। বাজারটিতে দিনভর লেনদেন হয়েছে ৫৯০ কোটি ৯৯ লাখ। আগের দিন লেনদেন হয় ৫৩৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৫৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৭ কোটি ২১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ২৪ কোটি ৭১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেমিনি সি ফুড।