প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে থাকা প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্যের সিংহভাগই হয় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে। পদ্মাসেতু চালুতে বেনাপোল বন্দর দিয়ে রপ্তানি বেড়েছে ৪০ শতাংশ। বছর ব্যবধানে বেড়েছে আমদানি ও রাজস্ব আহরণ। এ ধারা অব্যাহত রাখতে প্রশস্ত সড়ক ও বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নের দাবি ব্যবসায়ীদের। আর দিন-রাতের চিরায়ত ব্যস্ততা আরো খানিকটা বেড়েছে পদ্মা সেতু চালুর পর। কারণ, গেল এক বছরে আমূল বদলে গেছে এখানকার ব্যবসা-বাণিজ্যের চিত্র। পদ্মা সেতু চালুর আগে আমদানি কিংবা রপ্তানি পণ্যবাহী যানবাহনের দীর্ঘ জটলা লেগে থাকত দুই পাড়ে। অন্যদিকে, গন্তব্যে পৌঁছাতে কয়েকগুণ বেশি সময় লাগায় গুণতে হতো বাড়তি ব্যয়। নষ্ট হতো মূল্যবান পণ্য। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, এ সংকট এখন নেমেছে প্রায় শূন্যে। ফলে ব্যবসা বেড়েছে দ্বিগুণ পর্যন্ত। দাবি জানান, সড়ক সম্প্রসারণ এবং টার্মিনালের পরিসর বাড়ানোর। ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মতিয়ার রহমান, আগে এক পাড়ে পণ্যবাহী গাড়ি ৩০ দিন দাঁড়িয়ে থাকত। এখন বন্দরে ঢুকে মাত্র ২ দিনে। যে কারণে ৪৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আগামীতে ব্যবসা আরো বাড়বে। এখন ভারত থেকে আসা জরুরি অক্সিজেন, কাঁচামাল, গার্মেন্টস পণ্য মাত্র ৪ ঘণ্টা পদ্মা সেতু দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে। বেনাপোল কাস্টমস হাউসের তথ্য বলছে, গেল এক বছরে রাজস্ব আহরণ বেড়েছে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকারও ওপরে, যা বছর ব্যবধানে বেড়েছে ২৮ শতাংশ। সেই সঙ্গে রপ্তানি বেড়েছে ৪০ শতাংশ, যার পেছনে বড় অবদান উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিশেষ করে পদ্মা সেতুর। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, বাড়তি চাহিদার চাপ সামাল দিতে শুরু হয়েছে নতুন ইয়ার্ড নির্মাণের কাজ। বেনাপোল কাস্টমস হাউসের জয়েন্ট কমিশনার মো. শাফায়েত হোসেন বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে। যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় ব্যবসায়ীরা কম খরচে দুটিই বেশি করতে পারছেন। আগের চেয়ে ৪০ থেকে ৪৩ শতাংশ বেশি প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি ২৫ একর জায়গায় ইয়ার্ড নির্মাণকাজ চলছে। ইতোমধ্যে আমরা ১১৫ একর জায়গা অধিগ্রহণ করেছি। সেখানে নির্মাণ শুরু হবে। পদ্মা সেতু চালুর পর বেনাপোল বন্দর দিয়ে কনটেইনার পরিবহন হয়েছে ৩৮ হাজার। আমদানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে রেকর্ড ২৮ শতাংশ। দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটেছে। যার বড় উদাহরণ দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল। বছর ব্যবধানে আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে কয়েকগুণ। আর রাজস্ব আহরণ হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ।