দাম একটু বাড়তি হতে পারে, কারণ বর্ষা মৌসুমে মাঠে গর্ত থেকে লবণ তুলে তা বিক্রি করতে একটু বেগ পেতে হচ্ছে।
কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে কক্সবাজারের লবণ মিলগুলোয়। প্রতিদিনই ১ লাখ মেট্রিক টন সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে, যা প্রয়োজন মেটাবে কোরবানির পশুর চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে। মিলারদের দাবি, মাঠে ও মিলে মজুত রয়েছে ১২ লাখ মেট্রিক টন লবণ; তাই সংকট দেখিয়ে আমদানির প্রশ্নই আসে না। আর দেশে পর্যাপ্ত লবণ মজুত রয়েছে, গুজবে কান দেয়ার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক), কক্সবাজার।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে সরেজমিন দেখা যায়, কক্সবাজার সদরের ইসলামপুর ঘাটে ভিড়ছে লবণ ভর্তি একের পর এক ট্রলার। প্রতিটি ট্রলারে রয়েছে ৯০০ থেকে ১ হাজার মেট্রিক টন লবণ। কক্সবাজার বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. জাফর ইকবাল ভূঁইয়া জানান, চলতি মৌসুমে দেশে লবণ উৎপাদন হয়েছে ২২ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন, যা বিগত ৬২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আর কোরবানির চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে প্রয়োজন হবে ১ লাখ মেট্রিক টন লবণ। তিনি জানান, কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামপুর শিল্প এলাকায় রয়েছে ৮০টির মতো লবণের মিল। কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, মহেশখালী, টেকনাফ ও চকরিয়ার লবণ মাঠ থেকে প্রতিদিনই মিলে আসছে হাজার হাজার মেট্রিক টন লবণ। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এসব মিলে বেড়েছে ব্যস্ততা। ইসলামপুর শিল্প এলাকার লবণ ট্রাক গণনাকারী মো. আশরাফ হোসেন বলেন, এখন প্রতিদিনই ১০০ থেকে ১৫০ বা কিছু কম ট্রাক লবণ ভর্তি করে ঢাকাসহ সারাদেশে সরবরাহ করা হচ্ছে। যেখানে লবণ হবে প্রায় ১ লাখ থেকে দেড় লাখ মেট্রিক টন। মহেশখালীর লবণ চাষি আবদুর রশিদ বলেন, প্রায় ৯০০ টন লবণ বিক্রি করার ট্রলার নিয়ে ইসলামপুর ঘাটে এসেছি। এখানে প্রতি মণ লবণ বিক্রি করছি ৪৫০ টাকায়। লবণ শ্রমিক রহিম উদ্দিন বলেন, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে শ্রমিকদের ব্যস্ততা বেড়েছে। ট্রলার থেকে লবণবোঝাই করে মিলে এবং মিল থেকে ট্রাকে তুলে দিতে প্রতিদিনই কয়েকশ’ শ্রমিক ব্যস্ত রয়েছে।
সরেজমিন আরো দেখা যায়, মাঠ থেকে আসা লবণ ওজন করে নেয়া হচ্ছে মিলে। সেখানে এসব লবণ ক্রাশ করা হয়। তারপর প্রক্রিয়াজাতকরণ শেষে করা হয় প্যাকেজিং। তারপর সরবরাহ করা হয় সারাদেশে।
কক্সবাজার মিল মালিক সমিতির সভাপতি সামশুল আলম আজাদ বলেন, মাঠে ৮ লাখ মেট্রিক টন এবং মিলে প্রায় ৪ লাখ মেট্রিক টন লবণ রয়েছে। সেহেতু দেশে লবণের সংকট দেখা দেয়ার প্রশ্নই আসে না। যারা সংকট দেখিয়ে লবণ আমদানির পাঁয়তারা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কক্সবাজার বিসিকের উপমহাব্যবস্থাপক মো. জাফর ইকবাল ভূঁইয়া বলেন, গুজবে কান দেয়ার প্রয়োজন নেই। দেশে পর্যাপ্ত লবণ মজুত রয়েছে। মাঠে গর্ত করে প্রায় ৭ লাখ মেট্রিক টন মজুত করে চাষিরা। এখন সেই লবণ বিক্রি করছে। তবে দাম একটু বাড়তি হতে পারে, কারণ বর্ষা মৌসুমে মাঠে গর্ত থেকে লবণ তুলে তা বিক্রি করতে একটু বেগ পেতে হচ্ছে। তাই লবণের দাম একটু বাড়তি।