নতুন অর্থবছরের প্রথম সভা
১৩ ক্রয়প্রস্তাব অনুমোদন
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
নতুন অর্থবছরের প্রথম এবং চলতি বছরের ২৩তম সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ১৩ হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩ ক্রয়প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে জ্বালানি তেল, এলএনজি এবং সার আমদানির মতো গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রস্তাব রয়েছে। গতকাল বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত কমিটির এক ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান। তিনি বলেন, সভায় অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য ৪টি এবং ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য ১৩টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। ক্রয় কমিটির প্রস্তাবগুলোর মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের চারটি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের চারটি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের তিনটি, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের একটি এবং সেতু বিভাগের একটি প্রস্তাব ছিল। ক্রয় কমিটির অনুমোদিত ১৩টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ১৩ হাজার ৮৪৬ কোটি ৪৫ লাখ ২ হাজার ৬৬৪ টাকা। সাঈদ মাহবুব খান বলেন, ‘সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি’ প্রকল্পের ইন্ডিপেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্সের ভেরিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্পের নির্মাণকাজের সময় বর্ধিত হওয়ায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের চুক্তির মেয়াদ আগামী ২০২৪ সালের ৩০ জুন তারিখ (নির্মাণ কাজ সমাপ্ত) পর্যন্ত ১ বছর বৃদ্ধির জন্য দ্বিতীয় ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৫৪১ মার্কিন ডলার এবং ৫ কোটি ৫৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৮৫ টাকা ব্যয় বৃদ্ধি করে সংশোধিত চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলে কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। অতিরিক্তি সচিব আরো বলেন, জি-টু-জি ভিত্তিতে দুটি ক্রুড অয়েল মাদার ট্যাংকার এবং দুটি মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ সংগ্রহের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। অর্থাৎ, মোট চারটি জাহাজ ক্রয়ের জন্য ‘চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন’র কাছে দরপ্রস্তাব করা হলে প্রতিষ্ঠানটি দরপ্রস্তাব দাখিল করে। এতে ব্যয় হবে ২ হাজার ৪৮৬ কোটি ৩০ লাখ ৮৮ হাজার ৮৫৭ টাকা। ২০২৩ সালের জুলাই টু ডিসেম্বর সময়ে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ের জন্য পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্যে পাঁচটি প্যাকেজে বিভক্ত করে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে দুটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জ্বালানি তেল সংগ্রহ করা হবে। দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ইউনিপেক সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড, সিঙ্গাপুর (প্যাকেজ-এ ও ই) এবং ভাইটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড, সিঙ্গাপুর (প্যাকেজ বি, সি ও ডি) থেকে মোট ১৫ লাখ ৮৫ হাজার মে. টন জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে। এতে ব্যয় হবে ১২ হাজার ২৭৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। অতিরিক্ত সচিব বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) আইন-২০২১ এর আওতায় স্পট মার্কেট থেকে (২০২৩ সালের ১৫তম) এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত ২১টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এমএসপিএ চুক্তি চূড়ান্ত করা হয়। পেট্রোবাংলা কর্তৃক ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য ২১টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে একটি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ কমিটির সুপারিশে একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স এক্সেলারেট এনার্জি এলপি, ইউনাইটেড স্টেটস’র কাছ থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ ১৩.৩৫ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়েন সিদ্ধান্ত হয়। এতে ব্যয় হবে ৫৭২ কোটি ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৬৮০ টাকা। উল্লেখ্য, এর পাশাপাশি স্পট মার্কেট থেকে (২০২৩ সালের ১৭তম) এলএনজি আমদানিরও প্রত্যাশাগত অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। সাঈদ মাহবুব খান বলেন, রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে আটটি পৃথক প্রস্তাবে কাতার, কর্ণফুলী ফর্টিলাইজার কোম্পানি, কানাডা, সৌদি আরব ও রাশিয়া থেকে বিভিন্ন ধরনের মোট ২ কোটি ৮০ লাখ মেট্রিক টন সার আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ২ হাজার ৭৯৫ কোটি ১৭ লাখ ৪৪ হাজার ২৯৫ টাকা। এর আগে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চারটি প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয় বলে অতিরিক্ত সচিব জানান।