বিশ্ববাজারে দাম বৃদ্ধির শঙ্কা
চাল রপ্তানি বন্ধের পরিকল্পনা করছে ভারত
প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত বেশিরভাগ জাতের চাল রপ্তানি বন্ধ করার কথা ভাবছে বলে ব্লুমবার্গ নিউজ জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ব্লুমবার্গ নিউজ সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ভারত সরকার বাসমতি ছাড়া সব ধরনের চালের রপ্তানি নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছে। এতে বলা হয়েছে, বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক এ দেশটি তাদের বেশিরভাগ জাতের চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করার বিষয়টি বিবেচনা করছে। ভারতের সরকারের এ পদক্ষেপের ফলে বিশ্ববাজারে এরই মধ্যে আকাশচুম্বী হওয়া চালের দাম আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সরকার বাসমতি ছাড়া অন্য সব ধরনের চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছে। এর কারণ দেশীয় বাজারে মূল্যবৃদ্ধি এবং কর্তৃপক্ষ মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি এড়াতে চায়। ব্লুমবার্গকে এ তথ্য প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তিরা। ভারতের সরকারের এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হলে দেশটির প্রায় ৮০ শতাংশ চাল রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হবে। এ ধরনের পদক্ষেপ অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম কমাতে সহায়ক হলেও বিশ্বজুড়ে চালের দামে আরও বেশি উল্লম্ফনের ঝুঁকি তৈরি করবে। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকেরই প্রধান খাবার ভাত। বিশ্বজুড়ে চাল সরবরাহের প্রায় ৯০ শতাংশের ভোক্তা এশিয়া। বৈরি আবহাওয়া এল নিনো ফিরে আসায় চালের উৎপাদন ব্যাহত হবে আশঙ্কায় এরই মধ্যে বিশ্ববাজারে চালের দাম গত দুই বছরে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। বিশ্বজুড়ে চাল বাণিজ্যের প্রায় ৪০ শতাংশই যায় ভারত থেকে। দেশটির সরকার কিছু জাতের চালের রপ্তানিতে লাগাম টানার চেষ্টা করছে। গত বছর দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটি ভাঙা চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছিল। একই সঙ্গে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর বিশ্বজুড়ে গম এবং ভুট্টার মতো প্রধান এই খাদ্যশস্যের দাম বেড়ে যায়। এরপর দেশটির সরকার সাদা এবং বাদামি চালের চালানের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। পাশাপাশি গম ও চিনির রপ্তানিও সীমিত করে ফেলে দেশটি। এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলেও দেশটির খাদ্য, বাণিজ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ। বিশ্বের শতাধিক দেশে চাল সরবরাহ করে ভারত। দেশটির চালের বৃহত্তম ক্রেতার তালিকায় রয়েছে আফ্রিকার দেশ বেনিন, চীন, সেনেগাল, কোট ডি’আইভরি এবং টোগো। এদিকে, সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার খবরে ভারতীয় চাল রপ্তানিকারক কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দরে পতন ঘটেছে। দেশটির বৃহত্তম চাল কোম্পানি কেআরবিএল লিমিটেডের শেয়ারের দাম ৩ দশমিক ৭ শতাংশের মতো কমে গেছে। এছাড়া চমন লাল সেটিয়া এক্সপোর্টস লিমিটেডের শেয়ারের দাম ১ দশমিক ৪ শতাংশ, কোহিনুর ফুডস লিমিটেডের ২ দশমিক ৯ শতাংশ এবং এলটি ফুডস লিমিটেডের ৪ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। ইন্দোনেশিয়া, চীন এবং ফিলিপাইনের মতো আমদানিকারক কিছু দেশ চলতি বছরে অত্যন্ত আক্রমণাত্মক উপায়ে বিপুল পরিমাণ চাল মজুত করছে।