একযুগে সর্বোচ্চ
বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি কমলেও লক্ষণ নেই বাংলাদেশে
প্রকাশ : ২৩ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনা ও যুদ্ধ পরিস্থিতি কিছুটা সামলে উঠেছে বিশ্ব। দেশে দেশে কমতে শুরু করেছে মূল্যস্ফীতি। বিশ্বব্যাংক বলছে, সম্প্রতি সময়ে কৃষি ও খাদ্যশস্যের দাম ৪ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। এর পেছনে বিশ্বব্যাপী সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি ডলার সংকট মোকাবিলায় আমদানি নীতিতে পরিবর্তনকে কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। এভাবে অধিকাংশ দেশ সুফল পেলেও বাংলাদেশে এখনো তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, দেশের মূল্যস্ফীতি মে মাসের ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ থেকে কমে জুনে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশে এসেছে, যা এখনো গেল এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে জুন মাসে মূল্যস্ফীতি কমলেও খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি আগের মাস মের চেয়ে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশে অবস্থান করছে। এর আগে ২০১০-১১ অর্থবছরের গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৯২ শতাংশ।
আর ২০২১-২২ অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ, মিশর, পাকিস্তান, জাপান, ভিয়েতনাম, আর্জেন্টিনায় খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার বাড়ছে। অন্যদিকে ব্রাজিল, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং প্রতিবেশী ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপে এ হার কমেছে। সংস্থাটির তথ্য মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ছাড়া প্রায় সব দেশেই খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমছে। এমনকি বাংলাদেশ যেসব দেশ থেকে খাদ্যপণ্য আমদানি করে থাকে, সেসব দেশেও মূল্যস্ফীতি কমের দিকে। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, অর্থ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মাত্রাতিরিক্ত ঋণ নেওয়ায় মুদ্রা সরবারাহ বেড়েছে, যা মুদ্রাস্ফীতিকে উসকে দিয়েছে। অন্যদিকে ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, ডলার সংকটের কারণে আমদানি ব্যাহত হচ্ছে, সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে এবং মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬৯ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলারের আমদানির লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খোলা হয়েছে, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট ৯৪ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার। এতে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আরোপিত বিভিন্ন বিধিনিষেধ ও ডলার সংকটের কারণে এলসির পরিমাণ কমেছে ২৫ বিলিয়ন ডলার বা ২৭ শতাংশ। তবে, রপ্তানিমুখী শিল্পের কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্য বা অতি প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির এলসিতে সরকার সহায়তা করছে বলে দাবি করা হচ্ছে। অন্যদিকে দেশে পেঁয়াজ, আলু, ধান, শাকসবজি, গবাদি পশু, দুধ, মাছ, ডিম চাহিদা মতো উৎপাদন হচ্ছে; কিন্তু খুচরা বাজারে এসব পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাহিরে চলে যাচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ৪ শতাংশের মূল্যস্ফীতি চলতি বছরের মে মাসে এসে ৩ দশমিক ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ভুটানে গত বছর জুলাইয়ে ৫ দশমিক ৮ শতাংশের মূল্যস্ফীতি এ বছর মে মাসে আগের মাসের তুলনায় কিছুটা বেড়ে ৩ দশমিক ২ শতাংশে অবস্থান করছে।