বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য

কমেছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত

প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে এখনো ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডলার বিক্রি অব্যাহত থাকায় রিজার্ভের পরিমাণ আরো কমেছে। ১৯ জুলাই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি (বিপিএম৬) অনুযায়ী, রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৩ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস হিসাবে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৯ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার। গত রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ তথ্য প্রকাশ করে। এক সপ্তাহ আগে ১২ জুলাই বিপিএম৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ ২৩ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার ছিল। গত এক সপ্তাহে দেশের গ্রস রিজার্ভে ১২ কোটি ২৮ লাখ ডলার ক্ষয় হয়েছে। আর চলতি মাসের এখন পর্যন্ত রিজার্ভের ক্ষয় ১৩৫ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবারও রিজার্ভ থেকে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার ও ২০ লাখ ইউরো বিক্রি করা হয়েছে। রোববার বৈদেশিক লেনদেন বন্ধ থাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ডলার বিক্রিও বন্ধ ছিল। তবে আজ আবারো রিজার্ভ থেকে বড় অংকের ডলার বিক্রি করতে হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংকগুলোয় এখনো ডলারের সংকট কমেনি। প্রতিদিনই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ডলার কেনার বিপুল চাহিদা আসছে। কোনো কোনো দিন এ চাহিদার পরিমাণ ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকৃত চাহিদা যাছাই করে তবেই ডলার বিক্রি করছে। বাকি ডলার বাজার থেকে কেনার জন্য বলা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি করছে জ্বালানি তেল, এলএনজি, সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির দায় মেটানোর জন্য। পাশাপাশি সরকারের বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধের জন্যও ডলার বিক্রি করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে রেকর্ড সাড়ে ১৩ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি মাসের শুরু থেকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গণনায় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আইএমএফ থেকে ঋণ প্রাপ্তির শর্ত হিসেবে এর বাস্তবায়ন শুরু হয়। ২০১২ সাল থেকে আইএমএফের সদস্য দেশগুলো ব্যালান্স অব পেমেন্টস এবং ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম৬) অনুযায়ী রিজার্ভের হিসাবায়ন করে আসছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক তা শুরু করতে প্রায় একযুগ সময় নিয়েছে। বিপিএম৬ মূলনীতি অনুযায়ী, হিসাব করা রিজার্ভও বাংলাদেশের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ নয়। নিট রিজার্ভ হিসাবায়নের ক্ষেত্রে আইএমএফ থেকে নেয়া এসডিআরসহ স্বল্পমেয়াদি বেশকিছু দায় বাদ দেয়া হয়। সে হিসাবে বাংলাদেশের নিট রিজার্ভের পরিমাণ এখন ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।

ডলার সংকট কাটাতে আইএমএফ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণপ্রাপ্তির প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ডলার ছাড় দিয়েছে সংস্থাটি। তবে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে বেশকিছু শর্ত পরিপালন করতে হবে বাংলাদেশকে।