ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বর্ধিত দামে সিগারেট বিক্রি

তবুও রেকর্ড মুনাফা বিএটিবির

তবুও রেকর্ড মুনাফা বিএটিবির

মূল্যস্ফীতির চাপে সাধারণ মানুষ যখন দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে, তখন তামাকজাত পণ্য বিক্রি বেড়েছে বহুগুণ। হলে সিগারেট বিক্রি করে রেকর্ড আয় ও মুনাফা করেছে তামাক পণ্য বাজারজাতকারী বহুজাতিক ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি)। গত সোমবার (২৪ জুলাই) চলতি বছরের অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিএটিবি। তাতে দেখা যায়, বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) কোম্পানিটি ২১ হাজার ২৩০ কোটি টাকার রেকর্ড সিগারেট ও তামাকজাত পণ্য বিক্রি করেছে। আর এ বিক্রির বিপরীতে সব খরচ ও কর বাদ দেওয়ার পর কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ৯৫০ কোটি টাকা। মুনাফার ক্ষেত্রেও কোম্পানিটি রেকর্ড করেছে। গত ১৩ বছরে অর্থাৎ ২০১০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত কোম্পানিটির অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি বছর কোম্পানিটি যে ব্যবসা ও মুনাফা করেছে, তা ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০১০ সালের অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটির ব্যবসা ছিল মাত্র ৩ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকার। আর সে বছর কোম্পানিটির নিট মুনাফা ছিল ১৫৪ কোটি টাকা। সেখানে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটির ব্যবসা করেছে ২১ হাজার ২৩০ কোটি টাকার। আর নিট মুনাফা করেছে ৯৫০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ১৩ বছরে বহুজাতিক এ কোম্পানিটির আয় ও মুনাফা ছয় গুণের বেশি বেড়েছে। গত জানুয়ারি থেকে জুন- এই ছয় মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ৫৯ পয়সায়, গত বছরের একই সময়ে যা ছিল ১৬ টাকা ৯৩ পয়সা। বিএটিবির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটি ৩ হাজার ৯১১ কোটি পিস সিগারেট বিক্রি করেছে। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি বিক্রি করেছিল ৩ হাজার ৫৩৯ কোটি পিস সিগারেট। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ৩৭২ কোটি পিস সিগারেট বিক্রি বেড়েছে। সিগারেট কোম্পানির ক্ষেত্রে সরকার কর ও ভ্যাট সাধারণ যেকোনো কোম্পানির তুলনায় বেশি। সিগারেট ও তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে সরকার বিভিন্ন সময় সিগারেট ও তামাকজাত পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকারী কোম্পানির ওপর কর ও ভ্যাট বাড়িয়ে থাকে। এ কারণে কয়েক বছর ধরে বাজেটকে কেন্দ্র করে সিগারেটের দাম বেড়ে যায়। তবে বিএটিবির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, শুল্ক, কর ও ভ্যাট বাড়িয়েও সিগারেটের ব্যবহার কমানো যাচ্ছে না। বরং দাম যত বাড়ছে সিগারেটের বিক্রিও তত বাড়ছে। এতে বাড়ছে সিগারেট কোম্পানির আয় ও মুনাফা। দেশে বর্তমানে কোম্পানির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ করহার তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানির। এ করহার ৪৫ শতাংশ। তার সঙ্গে আছে আড়াই শতাংশ সারচার্জ। এর বাইরে অন্যান্য শুল্ক ও ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন করও রয়েছে। কিন্তু বছর বছর কর বাড়িয়েও সিগারেটের বিক্রি কমানো যাচ্ছে না। গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ৫১৮ টাকা ৭০ পয়সায় ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। দেশে বর্তমানে কোম্পানি খাতে সর্বোচ্চ ৪৫ শতাংশ করহার আরোপ করা হয়েছে তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানির ওপর। এর বাইরে অন্যান্য শুল্ক ও ভ্যাট রয়েছে। কিন্তু বছর বছর কর বাড়ানোর পরও কমেনি সিগারেটের বিক্রি। মূলত বেনসন, গোল্ডলিফ, ডার্বি, হলিউড, স্টার, ক্যাপসটেন, পাইলটসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিগারেট বিক্রি করে বিএটিবি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত