রপ্তানি ঋণের সুদহার কমল
প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
রপ্তানির ঋণের সুদহার ১ শতাংশ কমানোর ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে এখন থেকে প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানির ঋণের সুদহার হবে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ১০ শতাংশ। গত ১ জুলাই থেকে সুদ গণনার নতুন কাঠামো কার্যকর করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন এ পদ্ধতিতে ‘এসএমএআরটি’ (স্মার্ট-সিক্স মান্থ মুভিং এভারেজ অর্থাৎ ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় হার) সঙ্গে ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ যোগ করে ঋণ দিতে পারে। তবে প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানির ঋণের এটি কমিয়ে ২ শতাংশ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশ করা তথ্য অনুযায়ী, এখন ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় হার ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। এর সঙ্গে ব্যাংকগুলো প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানির ঋণের ২ শতাংশ যোগ করলে সর্বোচ্চ ঋণের সুদহার হবে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ। তবে রপ্তানি ঋণের সুদহার কমলেও অন্যান্য ঋণের সুদহার গণনা হবে আগের নিয়মে। অর্থাৎ এসএমএআরটি সঙ্গে ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ যোগ করে ঋণ দেবে ব্যাংকগুলো।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে। এর আগে ব্যাংকঋণের ৯ শতাংশ সীমা তুলে দিয়ে সুদ গণনার নতুন কাঠামো ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়। তার আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ষান্মাসিকের জন্য (জুলাই-ডিসেম্বর-২০২৩) নতুন মুদ্রানীতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছিল। নতুন নির্দেশনা বলা হয়েছে, বৈশ্বিক বিরূপ অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানকে অধিকতর অভিঘাত সহনশীল করার পাশাপাশি দেশের রপ্তানিমুখী শিল্পের বিকাশ ও প্রসারে চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে এবং অধিকতর দক্ষ ঋণ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে নতুন নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে ‘এসএমএআরটি’র সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ মার্জিন যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হবে। কোনো ঋণ অথবা ঋণের কিস্তি সম্পূর্ণ বা আংশিক মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হলে যে সময়ের জন্য মেয়াদোত্তীর্ণ হবে, ওই সময়ে চলমান ঋণ বা তলবি ঋণের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ঋণস্থিতির ওপর এবং মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির ওপর সর্বোচ্চ ১.৫ শতাংশ হারে দণ্ড সুদ আরোপ করা যাবে। আগের অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে। নতুন এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ২৯(২)(চ) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আইএমএফের শর্তে বাজারভিত্তিক ঋণের সুদহার নির্ধারণের ধারাবাহিকতায় এবার প্রি-শিপমেন্ট ঋণের সুদ হারও বাড়তে যাচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সার্কুলারে বলা হয়েছে, প্রি-শিপমেন্ট সুদের হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্মার্টের সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ যোগ করে সুদহার নির্ধারণ করতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ‘বৈশ্বিক বিরূপ অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অধিকতর অভিঘাত সহনশীল করার পাশাপাশি দেশের রপ্তানিমুখী শিল্পের বিকাশ ও প্রসারে চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে ও অধিকতর ঋণ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে এই নির্দেশনা দেওয়া হলো।’ কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও নির্দেশনা দিয়েছে, কোনো ঋণ অথবা ঋণের কিস্তি সম্পূর্ণ বা আংশিক মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হলে যে সময়ের জন্য মেয়াদোত্তীর্ণ হবে, ওই চলমান ঋণ/তলবি ঋণের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ঋণস্থিতির ওপর ও মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির সর্বোচ্চ ১.৫ শতাংশ হারে দণ্ড সুদ করা যাবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন-১৯৯৯ এর ২৯(২)(চ) ধারার ক্ষমতা বলে এই নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।