চাল রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আতঙ্ক
প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
উৎপাদন ঘাটতির আশঙ্কায় বাসমতি ছাড়া অন্যান্য সাদা চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চাল ক্রয়, মজুত ও দাম বৃদ্ধির ঘটনা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি। এতে বলা হয়, ভারতে বাসমতি ছাড়া অন্যান্য সাদা চাল রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সংকট তৈরি হয়েছে। দেশটিতে চাল কেনা, মজুত ও দাম বৃদ্ধির হিড়িক পড়েছে। মূলত ভারত একটি প্রধান চাল রপ্তানিকারক দেশ হওয়ায় বিশ্ববাজারে নাজুক অবস্থা তৈরি হচ্ছে। ওয়াশিংটনে বসবাসকারী প্রবাসী ভারতীয়রা জানান, দোকানগুলোতে স্বাভাবিক দামের চেয়ে তিন গুণ বেশি দামে চাল বিক্রি হচ্ছে। তবু মিলছে না সব দোকানে।
মেরিল্যান্ডের স্বপ্না ফুডসের মালিক তরুণ সারদানা জানান, ভারত চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর থেকেই চালের চাহিদা বেড়েছে। পর্যাপ্ত চাল না পেয়ে ভোক্তারা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে প্রিমিয়াম-গ্রেড বাসমতি চাল ক্রয় করে মজুত করছেন। তিনি আরও বলেন, চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে চালের দামও। কোথাও কোথাও প্রায় দিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে চাল। মূলত অতিরিক্ত চাহিদার কারণে পাইকারি বিক্রেতা ও চাল কোম্পনিগুলো দাম সমন্বয় করতে বাধ্য হচ্ছে। এদিকে গত বুধবার (২৬ জুলাই) চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। কেন না, ভারতের এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব ফেলবে। এক সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ পিয়েরে-অলিভিয়ের গৌরিঞ্চাস বলেছেন, বর্তমান পরিবেশে, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা বিশ্বের বিভিন্ন অংশে খাদ্যের দামের অস্থিরতা বাড়িয়ে তুলতে পারে। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এ ধরনের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়ে উৎসাহিত করব। কারণ, এটা বিশ্বব্যাপী প্রভাব ফেলবে।’
২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশটি ৪ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলারের চাল (বাসমতি ছাড়া অন্য সব ধরনের সাদা চাল) রপ্তানি করেছে, যার পরিমাণ এর আগের বছর ছিল ২ দশমিক ৬২ মিলিয়ন ডলার। ভারতের চালের বড় ক্রেতা হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, ইতালি, স্পেন ও শ্রীলঙ্কা। এর আগে চলতি বছরের ২০ জুলাই অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহ বাড়াতে এবং আসন্ন উৎসব মৌসুমে চালের খুচরা দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাসমতি ছাড়া অন্য সব ধরনের চাল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত।
দেশটি থেকে রপ্তানি হওয়া মোট চালের প্রায় ২৫ শতাংশই এই চাল। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারতের উত্তরাঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে পাঞ্জাব ও হরিয়ানাসহ কয়েকটি রাজ্যের নতুন রোপণ করা ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে অনেক এলাকার কৃষককে পুনরায় ধান রোপণ করতে হয়েছে। এতে উৎপাদন ঘাটতির আশঙ্কায় চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত। তবে খাদ্য নিরাপত্তার চাহিদা মেটাতে অন্যান্য দেশকে সরকারের প্রদত্ত অনুমতির ভিত্তিতে এবং তাদের সরকারের অনুরোধের ভিত্তিতে রপ্তানির অনুমতি দেয়া হবে বলে আরেকটি প্রতিবেদনে জানিয়েছিল এনডিটিভি।