ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা

৩০ হাজার মেগাওয়াট অতিক্রম করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ

৩০ হাজার মেগাওয়াট অতিক্রম করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ

বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে চলতি বছরের মধ্যে অব্যবহৃত বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতাও ৫০ শতাংশ বেড়ে যাচ্ছে। চলতি সপ্তাহে সরকারি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। খবর ইউএনবির। গ্রিড ও অফ গ্রিড বিদ্যুৎসহ দেশের মোট স্থাপন করা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ক্ষমতা বর্তমানে ২৮ হাজার ১৫৯ মেগাওয়াট। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি বছরের মধ্যে এটি ৩১ হাজার ২৭৩ মেগাওয়াট হবে। এর মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি অব্যবহৃত থাকবে। বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ১৬ হাজার মেগাওয়াট। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বর্তমানে গ্রিডে যুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা ২৪ হাজার ৯১১ মেগাওয়াট। এছাড়া ক্যাপটিভ, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ অফ গ্রিড বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা ৩ হাজার ২৪৮ মেগাওয়াট। অফ গ্রিড বিদ্যুৎ, বিশেষ করে ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনে কোনো বড় পরিবর্তন নেই। এ ধরনের বিদ্যুৎ প্রধানত শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত হয়। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে ২০২২ সালের ১ আগস্ট পর্যন্ত জাতীয় গ্রিডে যুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ২২ হাজার ৪৮২ মেগাওয়াট। চলতি বছরের একই সময় পর্যন্ত এই বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ২৪ হাজার ৯১১ মেগাওয়াট। অর্থাৎ এক বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে ২ হাজার ৪২৯ মেগাওয়াট। বর্তমানে আরো ৩ হাজার ১১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাইপলাইনে রয়েছে, যা আগামী ছয় মাসের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। এতে দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা ৩১ হাজার ২৭৩ মেগাওয়াটে পৌঁছাবে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, সব মিলিয়ে এই বছর গ্রিডে ৫ হাজার ৫৪৩ মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুৎ যুক্ত হবে। যদিও এই সময়ের মধ্যে চাহিদা আরো ১ হাজার মেগাওয়াট বাড়তে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মজার ব্যাপার হলো, সব নতুন বিদ্যুৎ বেসরকারি খাত থেকে আসছে, সরকারি প্ল্যান্ট থেকে নয়।’ তবে বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে ভাড়ায় চালিত প্রায় ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কর্মকর্তারা বলেছেন, অনেক গ্রাহক বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতার বিশাল বৃদ্ধিতে খুশি হতে পারে। তবে বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতার ৫০ শতাংশ অব্যবহৃত রেখে ক্যাপাসিটি চার্জ বা পরিচালন ব্যয় পরিশোধের ক্ষেত্রে এটি কর্তৃপক্ষের জন্য উদ্বেগের কারণ হবে। বিপিডিবির এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত অর্থবছর (২০২২-২৩) আমাদের ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে ২৬ হাজার কোটি টাকা দিতে হয়েছিল এবং এই চলতি অর্থবছরে এর পরিমাণ ৩৬ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাবে।’ ২০২১-২২ অর্থবছর যার পরিমাণ ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। ক্যাপাসিটি পেমেন্টের সঙ্গে আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মাত্র এক বছর আগে ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ২৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে গেলেও পেমেন্টের ৯০ শতাংশের বেশি অর্থ প্রদান করা হবে বৈদেশিক মুদ্রায়। ক্যাপাসিটি চার্জ হলো বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) অধীনে এক ধরনের জামানতযুক্ত পেমেন্ট। বেসরকারি উৎপাদনকারীর কাছ থেকে বিপিডিবি বিদ্যুৎ নিলেও সেই অর্থ দিতে হয়, না নিলেও দিতে হয়। বিপিডিবির আরেক কর্মকর্তা বলেন, ২ বছর আগের তুলনায় চলতি অর্থবছরে আমাদের ক্যাপাসিটি পেমেন্ট ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ বাড়বে। সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নতুন কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র এরই মধ্যে গ্রিডে যুক্ত হয়েছে বা সংযুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট, রামপাল পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ৬২০ মেগাওয়াট, চট্টগ্রামের বাঁশখালীর এস আলম গ্রুপের পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ১ হাজার ২২৪ মেগাওয়াট, মেঘনাঘাটে রিলায়েন্স পাওয়ার এলএনজিভিত্তিক প্ল্যান্ট থেকে ৭১৮ মেগাওয়াট, এলএনজিভিত্তিক জিই-সামিট মেঘনাঘাট-২ পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ৫৯০ মেগাওয়াট এবং মেঘনাঘাটে এলএনজিভিত্তিক ইউনিক গ্রুপের পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ৫৮৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হচ্ছে গ্রিডে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত