ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নিজেদের উন্নয়ন প্রচারে প্রকল্প

নিজেদের উন্নয়ন প্রচারে প্রকল্প

নিজেদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচারে প্রায় ১২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সমাজসেবা মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘উন্নয়নের মহাসড়কে জয়রথে বিজয়ের জয়ধ্বনি’। এরইমধ্যে প্রকল্পটি অনুমোদনও পেয়েছে। যদিও সমাজসেবার প্রকল্পের কাজ নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। তাদের অধিকাংশ প্রকল্পই কোনো ব্যক্তিস্বার্থে আবার কোনো প্রকল্প জনগণের জন্য নেওয়া হলেও তার সেবা জনসাধারণের কাছে পুরোপুরি পৌঁছায়নি। তবে প্রকল্পটি যৌক্তিক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, সরকারের উন্নয়ন অবশ্যই প্রচার প্রয়োজন। জানা গেছে, সম্প্রতি সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত প্রকল্পটি ১১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ে (এপ্রিল ২০২২ থেকে মার্চ ২০২৪ বাস্তবায়নের জন্য) অনুমোদন দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়, প্রকল্পটির মাধ্যমে সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের অবদানগুলো গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা ও সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে সমাজসেবা অধিদপ্তরের ব্র্যান্ডিং এবং এ সংক্রান্ত দক্ষতা বৃদ্ধি। উন্নয়ন প্রচারে প্রকল্পটি নেওয়া কতটা যৌক্তিক- জানতে চাইলে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলেন, ‘প্রকল্পটি যৌক্তিক বলেই তো পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে। তা না হলে তো দিত না। প্রকল্পটির মাধ্যমে সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের অবদানসমূহ গণমাধ্যম তথা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়ার বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, ‘সরকার সারা দেশের যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে তা অবশ্যই প্রচারের প্রয়োজন রয়েছে। দেশে এত উন্নয়ন হচ্ছে যার অনেক কিছুই জনগণের আড়ালে থেকে যাচ্ছে। গ্রামের মানুষের কাছে এগুলো তুলে না ধরলে কীভাবে জানবে?’ প্রকল্পটির মূল কার্যক্রম ও ব্যয় বিভাজনে দেখা যায়, ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০৯ জনকে ফার্মের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি কনসালট্যান্সি সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ফার্ম নিয়োগ দেওয়া হবে। এ ফার্মের মাধ্যমে অডিও-ভিডিও চলচ্চিত্র নির্মাণে ২ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। পাঁচটি সেমিনারে ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। প্রচার ও বিজ্ঞাপনে ব্যয় করা হবে ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। চুক্তিভিত্তিক ৯ যানবাহন ব্যবহারে ব্যয় করা হবে ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এছাড়া যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি কিনতে ২ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনাকালে দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি ও স্বাবলম্বী করে তোলার নামে এমন ২১টি প্রকল্পে সমাজসেবা অধিদপ্তর ৫০৩ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এর মধ্যে ১৩টি প্রকল্পের কাজ শেষ, ৮টি শেষের পথে। তবে প্রকল্পের অনেক ক্ষেত্রেই নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে।

প্রকল্পগুলোতে দেওয়া স্বল্পমেয়াদি ও নামকাওয়াস্তে প্রশিক্ষণ কাজে লাগেনি বলে কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে প্রশ্নও তুলেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। জানা গেছে, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করেছে বিভিন্ন এনজিও। এসব এনজিওর কোনো কোনোটির পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। যাদের কারণে এসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। তারপর ইচ্ছামতো অনিয়ম করা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত