নীলফামারীতে দেশের আরেকটি ৫০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে যাচ্ছে বিদেশি কনসোর্টিয়াম। বিওও (বিল্ড ওন অপারেট) পদ্বতিতে আইপিপি (ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট) আওতায় এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এতে ২০ বছর ধরে বিদ্যুৎ কিনতে সরকারের মোট খরচ হবে ১ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপিত হবে। বিদ্যুৎ বিভাগের নবায়নযোগ্য জ্বালানি-১ শাখার দেশের আরেকটা সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাবটি আগামী সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উপস্থাপিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বিদ্যুৎ বিভাগের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিওও পদ্বতিতে কনসোর্টিয়াম অব এএসকে নিউ এনার্জি কোম্পানি লিমিটেড, এজে পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড এবং এটিএন সলিশন লিমিটেড নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপন করবে। এতে আরো বলা হয়েছে, নেগোসিয়েটেড ট্যারিফ অনুসারে বর্ণিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ট ভিত্তিতে বিদ্যুৎ কিনলে কোম্পানিকে আনুমানিক ১৭৩২ দশমিক ৮ কোটি টাকা পরিশোধ করবে সরকার। প্রতি ১ ডলার ১০৭ দশমিক ২০ টাকা ধরা হয়েছে। কিলোওয়াটপ্রতি দাম ধরা হয়েছে ১০ দশমিক ৬৯৮ টাকা। এদিকে, ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সুতিয়াখালীতে ১৭৪ একর জমির ওপর ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির পরিবেশবান্ধব ৫০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষদিকে। বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের যৌথ উদ্যোগে এইচডি এফসি সিন পাওয়ার লিমিটেড এটি নির্মাণ করছে। অল্প সময়ের মধ্যেই এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হবে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে সৌর, জলবিদ্যুৎ ও বায়ুসহ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার পেছনে ছুটছে সরকার। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) মতে, বর্তমানে দেশে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ২ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য এসব থেকে কমপক্ষে ১২ শতাংশ বিদ্যুতের প্রয়োজন। এর আগে সরকার ২০১৫ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে মোট বিদ্যুতের কমপক্ষে ৫ শতাংশ এবং ২০২০ সালের মধ্যে ১০ শতাংশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এখনো তার কোনোটিই অর্জন হয়নি। টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) প্রস্তুতকৃত ‘ন্যাশনাল সোলার এনার্জি রোডম্যাপ ২০২১-৪১’ অনুসারে, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন সুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে ২০ হাজার মেগাওয়াট গ্রিন ইলেকট্রিসিটি উৎপাদন করতে পারে। এমনকি নদী তীরবর্তী এবং পরিত্যক্ত জমির যথাযথ ব্যবহার করে সৌরবিদ্যুতের সক্ষমতা ৩০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করা যেতে পারে বলে সেখানে বলা হয়েছে।