বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতকে এগিয়ে নিতে আরো বেশি বেসরকারি বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সফররত ভারতের ডিসান হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সজল দত্ত। গতকাল মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি। সঠিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অত্যাধুনিক ও ব্যয়বহুল পরিষেবা নিশ্চিত করতে বেসরকারি বিনিয়োগের কোন বিকল্প নেই। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে তাই আরো বেসরকারি বিনিয়োগ প্রয়োজন। স্বাধীনতার পর এত অল্প সময়ে বিশ্বের খুব কম দেশই বাংলাদেশের মতো উন্নতি করতে পেরেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবা খাতেও যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে, তবে তা মূলত হয়েছে সরকারের হাত ধরে। তবে বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবার মানকে আরো উন্নত করতে স্বাস্থ্যসেবা খাতে বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের এগিয়ে আসতে হবে। ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতেও ডিসান হাসপাতাল প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে বলেও জানান সজল দত্ত। তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এ ব্যাপারে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আগামী ৫ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশে একটি সুপার স্পেশালাইজড অত্যাধুনিক হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে। যেখানে ক্যানসার, হার্ট, গ্যাস্ট্রিক ও নিউরোলজিসহ অন্যান্য জটিল রোগের অত্যাধুনিক চিকিৎসা দেয়া হবে। এজন্য রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনাতেও হাসপাতাল বানানোর জমি খোঁজা হচ্ছে। ‘বাংলাদেশের চিকিৎসকরা মেধাবী ও দক্ষ উল্লেখ করে সজল দত্ত বলেন, বাংলাদেশের চিকিৎসকরা উন্নত বিশ্বসহ বিশ্বের প্রায় সর্বত্র তাদের মেধা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে যাচ্ছেন। বাংলাদেশেও ডিসানের প্রস্তাবিত হাসপাতালে বাংলাদেশি চিকিৎসকরাই নেতৃত্ব দেবেন। বাংলাদেশের নার্সিং সেবা খাতের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ দেশে নার্সিং ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা হবে। এখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন নার্স ও টেকনিশিয়ানের প্রয়োজন। ডিসান হাসপাতাল এ ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেয়।
তিনি বলেন, কলকাতায় অবস্থিত ৩০০ শয্যার ডিসান হাসপাতাল পূর্ব ভারতের সবচেয়ে অত্যাধুনিক বেসরকারি হাসপাতাল। বাংলাদেশি রোগীদের জন্য ওয়ানস্টপ সার্ভিস দেয়া হয় এই হাসপাতালে। যেখানে রোগীদের জটিল ও কঠিন সব ধরনের রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ অপারেশনের সেবা ন্যায্য খরচে দেয়া হয়। বর্তমানে হাসপাতালটিকে ৭৫০ শয্যায় উন্নীত করার কাজ চলছে উল্লেখ করে সজল বলেন, হাসপাতালটিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স অবতরণের জন্য হেলিপ্যাডের ব্যবস্থা রয়েছে। উল্লেখ্য, প্রতি বছরই বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসার জন্য ২৪ লাখ বাংলাদেশি ভারতে যান। এই খাতে ব্যয় হয় বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। প্রতি বছরই বাড়ছে বাংলাদেশি রোগীদের ভারতে যাওয়ার প্রবণতা। দক্ষিণ ভারতসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন এসব বাংলাদেশি রোগী। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডিসান হাসপাতালের পরিচালক শাওলি দত্ত।