ঢাকা ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কেন বাড়ছে পেঁয়াজের দাম

দুই মাসে ৩ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি
কেন বাড়ছে পেঁয়াজের দাম

দেশি পেঁয়াজ সরবরাহের পাশাপাশি দুই মাসে ৩ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। তারপরও সরবরাহ ঘাটতি ও আমদানির খরচ বেশি হওয়ার যুক্তিতে ঢাকার বাজারে তিন-চার দিনের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলেছেন, এখন কৃষকের হাতে পেঁয়াজ নেই। যেটুকু আছে, তা এখন পাইকারি বিক্রেতাদের হাতে। যে কারণে সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। এই অজুহাতে পাইকারি বিক্রেতারা দাম বৃদ্ধির কথা বলেছেন। অথচ দেশি পেঁয়াজের এই সরবরাহ ঘাটতি পূরণে গত জুনের ৫ তারিখ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। মাত্র দুই মাসের মধ্যেই ২ লাখ ৯৯ হাজার মেট্রিক টনের বেশি পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে বলে জানায় কৃষি মন্ত্রণালয়। ঢাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত বুধবার পাড়া-মহল্লার খুচরা দোকানগুলোতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়, কোথাও কোথাও অবশ্য ৮৫ টাকাও দাম চাইতে দেখা গেছে। অথচ এক সপ্তাহ আগেই এই পেঁয়াজের দাম ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। একইভাবে বেড়েছে আমদানি করে আনা পেঁয়াজের দাম। আমদানি করা প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নিউমার্কেটের মুদি সবজি বিক্রেতা মো. শরিফুল বলেন, তিনি আগের কেনা দেশি পেঁয়াজ ৭৫ টাকায় বিক্রি করছেন, তবে পাইকারি বাজারে যেভাবে দাম বেড়েছে সেটা আনলে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা বা তারও বেশি দামে বিক্রি করতে হবে।

কারওয়ান বাজারের আড়তদার মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘এখন কৃষকের কাছে পেঁয়াজ নেই, যা আছে বড় মহাজনদের কাছে। তাদের কাছে ৬ টন পেঁয়াজ চাইলে দিচ্ছে এক টন, দামও বেশি।’

জানা যায়, কারওয়ান বাজারের আড়তে গত বুধবার বিকালে প্রতি কেজি পেঁয়াজ পাইকারিতে ৭৫ থেকে ৭৭ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই পেঁয়াজ খুচরা বাজারে গেলে তা যে দামে বিক্রি হবে, তা বর্তমান খুচরা দামকে আরো বাড়িয়ে দেবে। কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বিক্রেতারা দেশি পেঁয়াজ ৭৫ টাকায় বিক্রি করছেন এবং একেবারে বাছাইকৃত বড় আকারের পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ৮০ টাকায়।

শ্যামবাজারের আমদানিকারক ও পাইকারি বিক্রেতা হাজী মো. মাজেদ বলেন, ‘দেশি পেঁয়াজের সংকট রয়েছে। কৃষকের কাছে যে পেঁয়াজ ছিল, তা শেষ। এখন যা আছে, পাইকারদের হাতে।

অন্যদিকে আমদানির খরচও বেড়েছে। যে কারণে দাম বেশি।’ টিসিবির বাজার বিশ্লেষণের তথ্য বলেছে, গত বছর এই সময়ে যে দামে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে তার চেয়ে প্রায় ৭৭ শতাংশ বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ২৬.৬৭ শতাংশ বেশি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলেছে, গত কয়েক বছর ধরে দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক উৎপাদন ৩৫ লাখ টনের বেশি। আর পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ২৮ লাখ টন। উৎপাদন বেশি হলেও আমদানি করতে হয় কারণ ২৫ শতাংশ বা তারও বেশি উৎপাদিত পেঁয়াজ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা জটিলতায় নষ্ট হয়ে যায়। কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, আমদানিকারকরা গত দুই মাসে ১২ লাখ ৩৪ হাজার মে. টনের বেশি পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি নিয়েছে গত দুই মাসে। যেখান থেকে আমদানি হয়েছে ২৪.২৩ শতাংশ। এতে করে বাজারে ঘাটতি হওয়ার কথা নয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত