ঢাকা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

প্রতিদিন ডিমের দামের বার্তা যায় ফেসবুক ও মুঠোফোনে

প্রতিদিন ডিমের দামের বার্তা যায় ফেসবুক ও মুঠোফোনে

রাজশাহীতে প্রতিদিন কত টাকায় ডিম বিক্রি হবে, সেই দাম ঠিক করেন রাজশাহী পোলট্রি ডিলার অ্যাসোসিয়েশন বা আরপিডিএ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘আরপিডিএ’ নামে একটি গ্রুপ রয়েছে। এ গ্রুপের ফলোয়ারের সংখ্যা আড়াই হাজার। এ গ্রুপের মাধ্যমে বা মুঠোফোনে খুদে বার্তার মাধ্যমে সমিতি থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় প্রতিদিনের ডিমের দাম। আর এই দাম ঘোষণা করেন আরপিডিএ সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন।

রাজশাহীর প্রান্তিক খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডিমের উৎপাদন খরচ যা-ই হোক না কেন, ডিম বিক্রি হয় আরপিডিএ নির্ধারিত দামে। সেই দামে কখনো লাভে, কখনো লোকসানে বিক্রি করতে হয় খামারিদের। ডিমের বাজারমূল্য নির্ধারণের বিষয়ে এসব খামারি কিছুই জানেন না। তাই ডিমের দৈনিক দাম নির্ধারণের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খামারিরা। রাজশাহীর তানোর উপজেলার সুফিয়া স্টোরের স্বত্বাধিকারী সোহেল রানা। প্রান্তিক পর্যায়ের ছোট এক খামারি তিনি। তার খামারে প্রতিদিন ৮০০ থেকে ৮৫০ ডিম উৎপাদিত হয়। তিনি ডিম ব্যবসায়ীদের কোনো সমিতির সঙ্গেই যুক্ত নন। অথচ তাকে সমিতির বেঁধে দেওয়া দামেই ডিম বিক্রি করতে হয় প্রতিদিন। সোহেল রানা বলেন, মুরগির খাবার বা ওষুধপত্রের দাম প্রতিদিন বাড়ে না। তাহলে প্রতিদিন কেন ডিমের দাম বেঁধে দিতে হয়। আমাদের মতো খামারিরা ডিমের দৈনিক দর বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে কিছুই জানি না। কিন্তু বেঁধে দেওয়া দামেই আমাদের ডিম বিক্রি করতে হয়। তিনি জানান, ‘আরপিডিএ’ নামের ফেসবুক গ্রুপ থেকে তারা প্রতিদিন ডিমের নতুন দর জানতে পারেন। তা ছাড়া সমিতির সদস্যদের মুঠোফোনেও নতুন দর জানিয়ে দেওয়া হয়। খামারি, আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীর পবা উপজেলার মোসলেমের মোড় এলাকায় অবস্থিত ডিমের আড়তদার সমিতি তথা আরপিডিএ’র কার্যালয় থেকেই মূলত পরিচালনা করা হয় এ জেলার ডিমের কারবার।

মোসলেমের মোড় এলাকায় সমিতির কার্যালয়ের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বড় ডিমের আড়তও রয়েছে। এ এলাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ডিম পাঠানো হয়। আরপিডিএ’র সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন একাধারে খামারি ও আড়তদার। তার খামারে প্রতিদিন ৩০ হাজার ডিম উৎপাদিত হয়। তিনিই প্রতিদিন রাজশাহীতে ডিমের দাম ঘোষণা করেন। গতকাল শনিবার সাদা ডিমের ক্রয়মূল্য ১০ টাকা ১০ পয়সা ও বিক্রয়মূল্য ১০ টাকা ৪০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। আর লাল ডিমের ক্রয়মূল্য ১০ টাকা ৬০ পয়সা ও বিক্রয়মূল্য ১১ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।

জয়নাল আবেদীন প্রথম আলোকে বলেন, প্রান্তিক খামারিদের স্বার্থের কথা চিন্তা করেই তিনি প্রতিদিন ডিমের দর বেঁধে দেন। কিন্তু সম্প্রতি বিভিন্ন ধরনের অভিযানের কারণে কেউ কেউ বেঁধে দেওয়া দামের চেয়েও কম দামে ডিম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। ১১ আগস্ট রাজশাহীতে ডিমের হালি ৫২ টাকা হওয়ার পর বাজারে অভিযান শুরু করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ওই দিন তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভোক্তা অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ঘোষণা দিয়েছে, কোনো অবস্থাতেই খুচরা পর্যায়ে একটি ডিমের দাম ১২ টাকার বেশি বিক্রি করা যাবে না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত