সোলার হোম সিস্টেম প্রকল্প
ঋণ মওকুফের আবেদন ইডকলের
প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিভিন্ন গ্রামীণ বিদ্যুতায়ন উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। সরকারের নেয়া কারণে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) সোলার হোম সিস্টেম (এসএইচএস) প্রকল্পে ব্যাপক অবনতি হয়েছে। ফলে নন-ব্যাংক এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি এখন সরকারের কাছ থেকে ঋণ মওকুফ চাইছে। চলতি বছরের ২৫ জুলাই অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের কাছে দেওয়া এক চিঠিতে এসএইচএস প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী সংস্থা (পিও) গ্রামীণ শক্তিকে ২১০ কোটি টাকা মওকুফের অনুরোধ জানিয়েছে ইডকল। সামাজিক উদ্যোগে নেতৃত্বস্থানীয় গ্রামীণ শক্তির প্রতিষ্ঠাতা হলেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। চিঠি অনুসারে, গ্রিডের দ্রুত সম্প্রসারণ, বিনামূল্যে এসএইচএস বিতরণ এবং অনিয়ন্ত্রিত এসএইচএস বাজারের কারণে গ্রাহকদের কাছ থেকে ঠিকমতো পেমেন্ট সংগ্রহ করতে পারছে না অংশগ্রহণকারী বা পিও সংস্থাগুলো। সে কারণেই তারা ইডকলের ঋণ পরিশোধে এক কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। ঋণ মওকুফের বিষয়টি অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে উপস্থাপন করা হয়। তবে এ বিষয়ে মন্ত্রী এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এর আগে ১০ জুলাই, গ্রামীণ শক্তি ঋণ মওকুফের জন্য ইডকলের অফিসে একটি প্রস্তাব পাঠায়; এতে বকেয়া ৪২০.৫১ কোটি টাকার অন্তত ৫০ শতাংশ মওকুফের অনুরোধ করা হয়। গ্রামীণ শক্তি জানিয়েছে, ‘এটি অনুমোদন হলে আমরা ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যালেন্স হিসাবে এক কিস্তিতে ২১০.২৬ কোটি টাকা পরিশোধ করব।’ চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, এসএইচএস প্রকল্পটি ২০১৪ সাল থেকেই ব্যাপক সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। এসএইচএস ক্রয় করা পরিবারগুলো তাদের বকেয়া পরিশোধ না করায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। ইডকলের এসএইচএস প্রকল্প এখন পর্যন্ত সরকারের সহায়তায় দেশের গ্রামাঞ্চলে ৪.১৩ মিলিয়ন সোলার হোম সিস্টেম সফলভাবে ইনস্টল করেছে। প্রকল্পটি দেশের ২ কোটি মানুষ বা জনসংখ্যার প্রায় ১২ শতাংশের জন্য ঝুঁকিমুক্ত ক্লিন এনার্জি হিসেবে সৌর বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করেছে। জনসংখ্যার এই অংশ আগে আলোর জন্য কেরোসিনের বাতি ব্যবহার করত। ২০০২ সালে একটি অংশগ্রহণকারী সংস্থা (পিও) হিসাবে প্রকল্পে যোগ দেয় গ্রামীণ শক্তি। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ১.৫৮ মিলিয়ন এসএইচএস ইনস্টল করেছে সংস্থাটি, যা এই প্রকল্পের অধীনে মোট ইনস্টল করা এসএইচএসের ৩৮ শতাংশ। ইডকলের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৩ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত এই কর্মসূচির আওতায় গ্রামীণ শক্তিকে মোট ১, ৯০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ঋণের মূল হিসাবে ১, ৪৮০ কোটি টাকা এবং সুদ হিসাবে ৫২২ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে গ্রামীণ শক্তি। অর্থাৎ, গ্রামীণ শক্তির মোট পরিশোধের পরিমাণ ২, ০০২ কোটি টাকা এবং মোট বকেয়া ঋণের পরিমাণ এখন ৪২০ কোটি টাকা।