১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ

নতুন প্রযুক্তিতে পোশাক প্রস্তুতকারকদের বিশাল বিনিয়োগ

প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

নতি স্বীকার না করে আগামী ২ বছরে শিল্পের দৃশ্যপট পাল্টে দিতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ নিয়ে নতুন প্রযুক্তিতে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের পোশাক, টেক্সটাইল ও অ্যাকসেসরিজ প্রস্তুতকারকরা। কৃত্রিম বা ম্যানমেড ফাইবার ও ফ্যাব্রিক, রিসাইকেলড ফাইবার, অটোমেটেড যন্ত্রপাতি এবং গার্মেন্টস ও অ্যাকসেসরিজ উৎপাদনের জন্য রোবটিক প্রযুক্তিসহ আসন্ন নতুন প্রযুক্তিগুলো এ খাতের রপ্তানি ঝুড়িতে বৈচিত্র্য আনার পাশাপাশি শিল্পের সামগ্রিক উৎপাদন প্রক্রিয়াকে গতিশীল করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ বিষয় সম্পর্কে জানেন, শিল্পসংশ্লিষ্ট এমন কয়েকজন জানিয়েছেন, প্রখ্যাত আটটি কোম্পানি প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা নতুন বিনিয়োগ করছে। এ উদ্যোগ তাদের পোশাক, টেক্সটাইল এবং অ্যাকসেসরিজ ইউনিটগুলোতে ৫০ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। যেসব বৃহৎ প্রতিষ্ঠান এ উদ্যোগে নেতৃত্ব দিচ্ছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- হামীম গ্রুপ, ডিবিএল গ্রুপ, প্যাসিফিক জিন্স, টিম গ্রুপ, উইন্ডি গ্রুপ, নিপা গ্রুপ, শাশা ডেনিম ও ইনডেট গ্রুপ। এই শিল্পগোষ্ঠীগুলো উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে এবং আন্তর্জাতিক তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানির বাজারে নিজেদের হিস্যা বাড়াতে নতুন কারখানা স্থাপন করছে। গণমাধ্যমে উদ্যোক্তারা স্বীকার করেন, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখন চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু তা সত্ত্বেও শিল্পের ভবিষ্যৎ নিরাপদ করতে এবং ব্যবসার ভিত্তিতে বৈচিত্র্য আনতে কৌশলগত পদক্ষেপের অংশ হিসেবে তারা এই বিনিয়োগ করছেন। পশ্চিমা বাজারে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তনের লক্ষণ দেখা যাওয়ায় আগামী বছর নাগাদ পোশাক ব্যবসা ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা। তবে তারা এ-ও স্বীকার করেন যে ডলারের অস্থিতিশীল বিনিময় হার ও বিঘ্নিত ইউটিলিটি সরবরাহের মতো চ্যালেঞ্জগুলো এখনও শিল্পের জন্য বাধা হিসেবে রয়ে গেছে। উদ্যোক্তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রেতারাও আশা প্রকাশ করেন যে আগামী বছরের মধ্যে বাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরতে পারে। বাংলাদেশে জি-স্টার র-এর কান্ট্রি ম্যানেজার শফিউর রহমান বলেন, ‘ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি যদি আরো খারাপ না হয়ে একই রকম থাকে, তাহলে যারা তাদের আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিনিয়োগ অব্যাহত রাখছে, তারাই সম্ভবত সুফল পাবে।’ বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগের সঙ্গে সম্পর্কিত সম্ভাব্য ঝুঁকির কথাও উল্লেখ করেন তিনি। অন্যতম শীর্ষস্থানীয় পোশাক রপ্তানিকারক হামীম গ্রুপ সম্প্রতি দুটি নতুন ইউনিট চালু করেছে এর মধ্যে একটি গার্মেন্ট-কাটিং ওয়েস্ট রিসাইক্লিং ইউনিট, অপরটি আউটারওয়্যার (অন্য কাপড়ের ওপর যে পোশাক পরা হয়) কারখানা। কোম্পানি সূত্র জানায়, দুটি ইউনিটেই তাদের প্রাথমিক বিনিয়োগ প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা। এছাড়া হামীম গ্রুপ ২০২৪ সালের মধ্যে পুনর্ব্যবহৃত সুতা (ইয়ার্ন) থেকে ফ্যাব্রিক উৎপাদনে যেতে চায়। আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন ও উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে উইন্ডি গ্রুপ ৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। আরেক বৃহৎ পোশাক রপ্তানিকারক প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপ চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) ৭.৫ লাখ বর্গফুট জায়গাজুড়ে একটি নতুন উৎপাদন কারখানা প্রতিষ্ঠা করতে ৩১.৭৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে।