বাংলাদেশের ম্যাক্রো ইকোনমিক (সামষ্টিক অর্থনীতি) রিস্কসহ ফিসক্যাল রিস্ক বিশ্লেষণ করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি মিশন ১৫ দিনের সফরে বাংলাদেশে আসছে। এ সময় বাংলাদেশের ডেট ম্যানেজমেন্ট স্ট্র্যাটেজিস, রিসেন্ট অ্যান্ড এক্সপেক্টেড ট্রেন্ডস ইন এক্সটার্নাল নন-কনসেশনাল বরোয়িং এর তথ্য পর্যালোচনাসহ সরকারি ঋণের ঝুঁকি নির্ধারণ করা হবে। অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, আইএমএফ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ পাওয়ার শর্তের সঙ্গে সংস্থাটির এই টেকনিক্যাল অ্যাসিসটেন্স (টিএ) মিশন সফরের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি একটি নিয়মিত মিশন- বলেন তিনি। তিনি আরো জানান, আগামী ডিসেম্বরে বাংলাদেশ আইএমএফ থেকে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার আশা করছে। তার আগে ঋণের শর্ত বাস্তবায়ন যাচাই করতে আগামী ৪ অক্টোবর রিভিউ মিশন আসবে। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থানকালে অর্থ মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করবে আইএমএফের এই টেকনিক্যাল অ্যাসিসটেন্স (টিএ) মিশন। এই সময়ে বাংলাদেশের ম্যাক্রো ইকোনমিক রিস্ক অ্যানালাইসিস, ডেট সাসটেইনেবিলিটি অ্যানালাইসিস এবং মিডিয়াম টার্ম ম্যাক্রো ইকোনমিক পলিসি স্টেটেন্ট (এমটিএমপিএস)-এ ম্যাক্রো ইকোনমিক ও ফিসক্যাল আউটলুকে চিহ্নিত ঝুঁকিগুলো নিয়ে আলোচনা করবে এই মিশন। আইএমএফ মিশনের আসন্ন এই সফর উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে অর্থ বিভাগ। প্রয়োজনীয় তথ্যাদি ও সহায়তার জন্য গত সোমবার (২৮ আগস্ট) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মনোনয়ন দিতে বলেছে অর্থ বিভাগের সামষ্টিক অর্থনীতি অনুবিভাগ। সফরের প্রথম দুই দিন অর্থ বিভাগের বিভিন্ন উইংয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করবে আইএমএফ। এর মধ্যে বাংলাদেশের ফিসক্যাল রিস্ক ম্যানেজমেন্টের লিগ্যাল ও ইনস্টিটিউশনাল সেটিং এবং স্টেট ওন এন্টারপ্রাইজেসগুলোর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে। অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, স্টেট ওন এন্টারপ্রাইজেস (এসওইএস) নিয়ে আইএমএফ অনেক তথ্যই জানতে চাইবে। যেমন- স্টেট ওন এন্টারপ্রাইজেসগুলোর গভর্নেন্স ফ্রেমওয়ার্ক কেমন, এসওইএসগুলোর কন্ট্রোল অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল ওভারসাইটস, পাবলিক সার্ভিস অবলিগেশনস অব এসওইএস, ফাইন্যান্সিয়াল সাপোর্ট ও এসওইএস এবং ট্র্যাক রেকর্ড অব ডেট সার্ভিস পেমেন্ট অবলিগেশনস নিয়ে আলোচনা হবে। তারা জানান, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রজেক্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের কোনো ফিসক্যাল রিস্ক তৈরি হচ্ছে কি না, তাও পর্যালোচনা করবে আইএমএফ। পিপিপি রিলেটেড ফার্ম অ্যান্ড কন্টিনজেন্ট লায়াবিলিটিস বিশ্লেষণ করবে এই মিশন। এছাড়া, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেয়া সরকারের গ্যারান্টি ও ঋণের ব্যবস্থাপনা বিশ্লেষণ করবে আইএমএফ টিম। এর মধ্যে কারেন্ট স্টক অব গ্যারান্টিস, বিনিফিশিয়ারিজ, আউটস্ট্যান্ডিং গ্যারান্টিস, সার্ভিসিং অব গ্যারান্টেড ডেট এবং আগামী তিন অর্থবছরে কী পরিমাণ গ্যারান্টি দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তা পর্যালোচনা করবে। অধিকন্তু, গ্যারান্টেড ডেট সার্ভিসিংয়ের জন্য বাজেটে কোনো ধরনের প্রভিশন রাখা হয়েছে, তা যাচাই করে ঝুঁকি নির্ধারণ করা হবে।