পরিবেশবান্ধব পণ্য, প্রকল্প বা উদ্যোগের জন্য গঠিত রিফাইন্যান্স স্কিম থেকে মাত্র ৫ শতাংশ সুদে ২০ বছরের জন্য সাশ্রয়ী বা এফোর্ডেবল গ্রিন হাউজিং লোন নিতে পারবেন গ্রাহকরা। আগের নীতিমালা অনুযায়ী, এফোর্ডেবল গ্রিন হাউজিং লোন সর্বোচ্চ ১০ বছরের জন্য নেয়া যেত। এখন সেটিকে বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাস্টেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্ট ৪০০ কোটি টাকার এই রিফাইন্যান্স স্কিমের নতুন নির্দেশনায় এ কথা জানিয়েছে। নতুন নীতিমালায়, প্রি-সার্টিফায়েড হলেই এখন থেকে গ্রিন ইন্ডাস্ট্রি, গ্রিন বিল্ডিং, গ্রিন ফিচারিং বিল্ডিং বা এফোর্ডেবল গ্রিন হাউজিং লোন পাওয়া যাবে রিফাইন্যান্স স্কিমটি থেকে। আগে চূড়ান্ত সনদ পাওয়ার পর এসব ঋণের জন্য আবেদন করতে হতো। এছাড়া ব্যাংক ও গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হারও কমানো হয়েছে। এখন থেকে কমার্শিয়াল ব্যাংকের কাছে থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১ শতাংশ সুদ নেবে, আগে এটি ৩ শতাংশ ছিল। এছাড়া, গ্রাহকদের ঋণের সময়সীমার উপর ভিত্তি করে ৫-৬ শতাংশ সুদ দিতে হতো। এখন সব মেয়াদি ঋণেই ৫ শতাংশ সুদ দিতে হবে গ্রাহকদের। তবে সরকারি অগ্রাধিকার খাত হিসেবে কৃষি খাতের ‘সোলার ইরিগেশন পাম্প’ প্রোডাক্টের ঋণের বিপরীতে সুদ দিতে হবে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ। আগের নীতিমালায় বিভিন্ন পণ্যের বিপরীতে স্কিম থেকে ঋণ পাওয়ায় সর্বোচ্চ সীমা ছিল। নতুন সার্কুলারে এই সীমা তুলে দেওয়া হয়েছে।
অর্থাৎ, যৌক্তিকতা থাকলে ৭০টি প্রোডাক্টের বিপরীতে যেকোনো পরিমাণ ঋণ নেয়া যাবে। তবে নতুন নীতিমালায় ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহকের বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। আগে ১০০ টাকার বিনিয়োগে ৮০ টাকা ঋণ পাওয়া যেতো। গ্রাহককে ২০ টাকা বিনিয়োগ করতে হতো। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, একই পরিমাণ বিনিয়োগে ঋণ পাওয়া যাবে ৭০ টাকা। অর্থাৎ গ্রাহককে বিনিয়োগ করতে হবে ৩০ টাকা। আগে ঋণের গ্রেস পিরিয়ড ৬-১৮ মাস ছিল, নতুন নির্দেশনায় সেটিকে সর্বোচ্চ ১২ মাস করা হয়েছে। সার্কুলারে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলো এই রিফাইন্যান্স স্কিম থেকে কোনো শর্ত ছাড়াই ঋণ দিতে পারবে। তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে স্কিম থেকে ঋণ নিতে নন-পারফর্মিং লোন ১০ শতাংশের নিচে হতে হবে। এই শর্তটি আগের সার্কুলারে ছিল না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি পক্ষের সঙ্গেই আমাদের আলোচনা হয়েছে। তারা আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে। এর কয়েকটি ভালো হওয়ায় আমরা সেগুলো গ্রহণ করেছি। ‘এফোর্ডেবল গ্রিন হাউজিং লোন নেয়ার ক্ষেত্রে আগে কিছু প্রতিবন্ধকতা ছিল। নতুন নীতিমালার মাধ্যমে সেগুলো দূর করা হয়েছে। ফলে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তদের রিফাইন্যান্স স্কিম থেকে লোন পাওয়ায় সুবিধা হবে, ‘যোগ করেন তিনি। নতুন সার্কুলার অনুযায়ী, পরিবেশবান্ধব পণ্য, প্রকল্প বা উদ্যোগের অধীনে ৭০টি প্রোডাক্টের বিপরীতে এসব ঋণ নেয়া যাবে। আগে এটি ছিল ৬৮টি। নতুন করে লিথিয়াম ব্যাটারি ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট এবং জুট প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রি নামে দুইটি প্রোডাক্ট যুক্ত করা হয়েছে। আগে বিভিন্ন প্রোডাক্টে ভিন্ন ভিন্ন ঋণের মেয়াদ থাকলেও নতুন সার্কুলারে সব ধরনের পণ্যে ৩ থেকে ১০ বছরের জন্য ঋণ দেয়া হবে।